ছবি: সংগৃহীত।
কোভিড রোগীদের শুশ্রুষায় এত দিন কাজ করছিলেন। এখন নিজেই করোনা আক্রান্ত শিলিগুড়ির মাটিগাড়া কোভিড হাসপাতালের এই নার্স। তবে উপসর্গ নেই। তাই পুরনো রুটিনেই রয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গী রোগীরা কেউ ঠিকমতো খাচ্ছেন কিনা, কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কিনা— সব দিকেই নজর রয়েছে তাঁর, এত দিন যেমন কাজের সময়ে থাকত। আর দিনশেষে বসছেন প্রার্থনায়। কী বলছেন আরাধ্যকে? তাঁর কথায়, ‘‘সকলের হয়ে প্রার্থনা করছি। সবাইকে সুস্থ করে দিতে বলছি।’’
রাজ্যের করোনা নিয়ন্ত্রণের দ্বায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্তা গোপালকৃষ্ণ ঢালি তিন দিন আগে শিলিগুড়িতে এই হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় দেখেন, ওই নার্স আইসিইউ’তে রোগীদের খাবার দিচ্ছেন। নিজে করোনা সংক্রমিত হয়েও যে ভাবে তিনি রোগীদের পাশে থাকছেন, তা জেনে খুশি ঢালি। ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই নার্সের মানসিকতা, মানুষের সেবা করার ইচ্ছে দেখে সত্যিই খুবই ভাল লেগেছে। রোগী পরিষেবার কাজে যুক্ত সকলেরই এই মানসিকতা থাকা দরকার।’’ তিন তলার ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন তিনি। সেখানে কোনও সময়ে অন্য নার্সরা কাজে ব্যস্ত থাকলে রোগীদের সমস্যায় ডাক্তারেরা এই আক্রান্ত নার্সেরই খোঁজ করছেন।
কাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন? শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড়ের কাছে রাজীবনগরের বাসিন্দা ওই নার্স বলেন, ‘‘মাদার টেরিজা। তিনি মানুষের জাতধর্ম না দেখে সেবা করতেন। দুঃস্থদের পাশে থাকতেন। সেটাই করতে চেষ্টা করি।’’ প্রশিক্ষণ নিয়ে বছর তিনেক আগে মাটিগাড়ার এই নার্সিংহোমে যোগ দিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের সুপার বিমল বর্মণ বলেন, ‘‘ওই নার্স রোগী অন্ত প্রাণ। এখানকার আর এক ফার্মাসিস্টও করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। এখানে ভর্তি থাকার সময় তিনিও রোগী পরিষেবার কাজ করতেন।’’
আরও পড়ুন: করোনা-দুর্যোগেও গণেশে মুখরক্ষা পুজো ব্যবসার