আবার: ২০০৬ সালে ধর্মতলার ধর্না মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মেট্রো চ্যােনলে মণীন্দ্রনাথ সেন (ইনসেটে)। ফাইল ও নিজস্ব চিত্র
রবিবার রাতে টিভিতে ধর্নার ছবি দেখে ২০০৬ সালের ডিসেম্বরের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় সেটা। তখন আমি বৈদ্যুতিক কাজের ঠিকাদারির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। কাজে যেমন ফুরসত পেতাম, তেমন ভাবে চলে আসতাম ধর্মতলার এই মেট্রো চ্যানেলে। কখনও রাস্তার উপরে খবরের কাগজ পেতে বসে থাকতাম সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। কখনও আবার কাজ সেরে বিকেলে এসে রাতে বাড়ি ফিরতাম। রাস্তায় বসার জায়গা না পেলে ডিভাইডারের উপর চড়তাম। দেখতাম মঞ্চের সামনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিমরা।
মুকুল রায়কেও দেখতাম চারদিকে তদারকি করতে। সারাক্ষণ মঞ্চের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তখন তো এত মোবাইলের উৎপাত বাড়েনি। ফলে ছবি না তুলে সকলেই ‘দিদি’র কথা শুনতে ব্যস্ত থাকতাম। খাবারদাবারের কথাও খুব একটা মাথায় আসত না। এমন করে টানা বেশ কয়েক দিন এসেছি ধর্মতলায়।
১৯৭৮ এর পর থেকে আমি আর সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। ’৭৮ এর আগে সক্রিয় ভাবে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। বিভিন্ন কারণে রাজনীতি থেকে দূরে সরে আসি। কিন্তু মনের ভিতর সুপ্ত ভালবাসা তো থেকেই যায়। আর তাই বোধহয় ১৯৮৪-তে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, বিশ্বাসবোধ তৈরি হয়েছিল। মনে হয়েছিল লড়াকু মনোভাবের এই মহিলাই এক দিন রাজ্য চালাবেন। সেই শ্রদ্ধা, ভালবাসাটাই আমাকে এখানে টেনে এনেছে।
ঠিক-ভুল বুঝি না। আমি ওঁর লড়াইটা বুঝি। তাই বাড়িতে কিছু না জানিয়েই নিজের মতো করে ছুটে যাই। ৭৩ বছর বয়স হল। শরীর মাঝেমধ্যেই বিগড়োচ্ছে। কিন্তু তাতে কী!
আবার আসব!
এ ভাবেই ১৩ বছর আগে এসেছিলাম।