Manipur Violence

মণিপুর ফুঁসছে, ছড়াচ্ছে অশান্তি, মহারাষ্ট্রে ভোটের প্রচার বাতিল করে দিল্লি ফিরে গেলেন অমিত শাহ

শনিবার ইম্ফলে তিন মন্ত্রী এবং ছ’জন বিধায়কের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন ধরানো হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:১১
Share:

মহারাষ্ট্রে প্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে দিল্লি ফিরলেন অমিত শাহ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ছ’টি দেহ উদ্ধারের পর থেকে মেইতেইদের বিক্ষোভে পুড়ছে মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকা। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রে ভোটপ্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে রবিবার দিল্লি ফিরে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার ইম্ফলে তিন মন্ত্রী এবং ছ’জন বিধায়কের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের পৈতৃক বাড়িতেও আগুন ধরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এর পরেই মহারাষ্ট্রে প্রচারের কর্মসূচি বাতিল করে দিল্লি ফিরলেন শাহ।

Advertisement

শুক্র এবং শনিবার মণিপুর থেকে ছ’টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। মেইতেইরা মনে করছেন, ওই ছ’টি দেহ জিরিবাম থেকে অপহৃত তিন মহিলা এবং তিন শিশুর। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য ছিলেন। অভিযোগ, কুকি জঙ্গিরা তাঁদের অপহরণ করেন। যদিও মণিপুর সরকারের তরফে উদ্ধার হওয়া দেহের পরিচয় নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। ছ’টি দেহ উদ্ধারের পর থেকেই জিরিবাম জেলায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মেইতেইরা। প্রশাসনের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, শনিবার পিডব্লিউডি মন্ত্রী গোবিন্দাস কন্ঠৌজাম, বিজেপি বিধায়ক ওয়াই রাধেশ্যাম, বিজেপি বিধায়ক পাওনাম ব্রজেন, কংগ্রেস বিধায়ক টিএইচ লোকশ্বরের বাড়িতে আগুন ধরানো হয়েছে। সে সময় মন্ত্রী, বিধায়ক এবং তাঁদের পরিবারেরা বাড়িতে ছিলেন না। ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে বিক্ষোভকারীরা প্রথমে জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন। তার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। ইম্ফল পূর্বে লুয়াংশাংবামে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের পৈতৃক বাড়িতে হামলার অভিযোগও উঠেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেল্‌সের জওয়ানদের এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ দমন করতে রবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনী। তার পরেও মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন যাওয়ার পথে অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে লোহার রড ফেলে রাখা হয়েছে। হামলাকারীদের দাবি, জিরিবাম জেলায় ছ’জনকে খুন করায় অভিযুক্ত যাঁরা, তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। জিরিবাম, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিমে কার্ফু জারি করা হয়েছে। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, চূড়াচাঁদপুর-সহ মোট সাত জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইম্ফল পশ্চিম, ইম্ফল পূর্ব এবং বিষ্ণুপুর থেকে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একাধিক পিস্তল, কার্তুজ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত গত সপ্তাহের শুরুতে। মণিপুরের জিরিবামে কুকি জঙ্গি এবং সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। অভিযোগ, সেই সময় একদল কুকি জঙ্গি মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে অপহরণ করে। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হন ১০ কুকি জঙ্গি। যদিও কুকি সম্প্রদায়ের দাবি, নিহত ১০ জন ছিলেন ‘গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী’। তাঁদের দেহ মিজ়োরামে নিতে চেয়ে গত সোমবার থেকে শিলচরের হাসপাতালের মর্গ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কুকিরা। শনিবার সকালে পুলিশ ১০ জনের দেহ নিয়ে কুকি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরের দিকে রওনা হলে তাদের ঘেরাও করেন কুকিরা। বিক্ষোভ দমন করতে লাঠি চালায় পুলিশ। তার মধ্যে ছ’জনের দেহ উদ্ধার ঘিরে শুরু হয় মেইতেইদের বিক্ষোভ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement