খাগড়াগড় শুনানি

সেই বাড়িতে পার্টি অফিস ছিল না, জানাল পুলিশ

দোতলায় ছিল জঙ্গিদের ডেরা ও বোমা-বিস্ফোরক তৈরির কারখানা। কিন্তু খাগড়াগড়ে মহম্মদ হাসান চৌধুরীর বাড়ির এক তলায় তৃণমূলের কোনও কার্যালয় ছিল না বলে শুক্রবার আদালতে দাঁড়িয়ে জানালেন বর্ধমান থানার তদানীন্তন আইসি আবদুল গফ্ফর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৬
Share:

দোতলায় ছিল জঙ্গিদের ডেরা ও বোমা-বিস্ফোরক তৈরির কারখানা। কিন্তু খাগড়াগড়ে মহম্মদ হাসান চৌধুরীর বাড়ির এক তলায় তৃণমূলের কোনও কার্যালয় ছিল না বলে শুক্রবার আদালতে দাঁড়িয়ে জানালেন বর্ধমান থানার তদানীন্তন আইসি আবদুল গফ্ফর।

Advertisement

কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারকের এজলাস তথা এনআইএ আদালতে খাগড়াগড় মামলার রুদ্ধদ্বার বিচার শুরু হয় ২০ অগস্ট। তার পর শুনানি ছিল এ দিন।

আদালত সূত্রের খবর, বেলা সাড়ে ১২টায় শুনানি শুরু হয়। কড়া পুলশি পাহারায় ধৃত ২০ জনকে আদালতে হাজির করানো হয়। সাধারণ পুলিশদের সঙ্গে একে ৪৭ হাতে ছিলেন চার জন কমান্ডোও।

Advertisement

আসামি পক্ষের আইনজীবী ফজলে আহমেদ খান এ দিন তদানীন্তন আইসি গফ্ফরকে জিজ্ঞেস করেন, খাগড়াগড়ে যে বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়, সেখানে কি কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ছিল? গফ্ফর জানান, এমন কিছু সেখানে ছিল না। ওই আইনজীবী তখন জিজ্ঞেস করেন, ওই বাড়িতে কি তৃণমূলের কোনও কার্যালয় ছিল? ফের গফ্ফর নেতিবাচক উত্তর দেন।

ফজলে যদিও জানান, ওই বাড়িতে তৃণমূলের পতাকা পাওয়া গিয়েছে। সরকার পক্ষের আইনজীবী শ্যামল ঘোষের বক্তব্য, শাসক দলের পতাকা বহু জায়গাতেই থাকতে পারে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে সেখানে শাসক দলের কার্যালয় আছে। গফ্ফর জানান, ওই বাড়ির অদূরে, খাগড়াগড় মোড়ে তৃণমূলের একটি বড় অফিস আছে।

২০১৪-র ২ অক্টোবর খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের ঠিক পরেই অভিযোগ ওঠে, ওই দোতলা বাড়ির এক তলায় তৃণমূলের একটি দলীয় অফিস আছে, পরে বলা হয় ঠিক পার্টি অফিস নয়, সে বছর লোকসভা ভোটের সময়ে সেখানে দলের নির্বাচনী কার্যালয় তৈরি হয়েছিল। শাসক দলের এই ধরনের যোগ ছিল বলেই পুলিশ সেই বাড়ির উপর তেমন নজরদারি করত না, এমন অভিযোগও তখন ওঠে।

আসামি পক্ষের আইনজীবীদের প্রশ্নের উত্তরে বর্ধমান থানার আইসি এ দিন আদালতে জানান, খাগড়াগড়ে জঙ্গি ডেরা থাকা ও বিস্ফোরক তৈরির ব্যাপারে ঘটনার আগে পুলিশের কাছে কোনও খবর ছিল না।

পরে, আদালতের বাইরে সরকারি তথা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ বলেন, ‘‘এর মধ্যে রাজনীতি এনে মামলাটি লঘু করার চেষ্টা হচ্ছে।

অথচ এই মামলার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন যুক্ত, এর আন্তর্জাতিক গুরুত্বও রয়েছে।’’

বর্ধমান থানায় মামলাটি রুজু করা হয়েছিল গফ্ফরের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই। গফ্ফর এখন জগাছা থানার আইসি।

আসামি পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, মামলার এফআইআরটি ত্রুটিপূর্ণ। আদালত সূত্রের খবর, এ দিন তাঁরা প্রশ্ন করেন, কাকে উদ্দেশ করে আইসি গফ্ফর অভিযোগটি লিখেছিলেন? ওই পুলিশ অফিসার জানান, পুলিশ ‘সুয়ো মোটো’ বা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলাটি রুজু করেছিল, এ ক্ষেত্রে কাউকে উদ্দেশ করে অভিযোগ দায়ের করার দরকার হয় না। গফ্ফর জানান, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবর প্রাথমিক ভাবে এলেও ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি বারুদের গন্ধ পান আর তখনই মনে হয়, গণ্ডগোল আছে। তিনি এক জন এসআই-কে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।

আদালত সূত্রের খবর, বিচারক শুভ্রা ঘোষ এ দিন মামলায় প্রাসঙ্গিক নয়, এমন প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকতে আইনজীবীদের নির্দেশ দেন।

বেলা প্রায় দেড়টা নাগাদ এ দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। পরবর্তী শুনানি সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement