school education

School education: গৃহপাঠ নেই, তৃতীয় ভাষা শিক্ষায় সঙ্কট

সমস্যা ইউটিউবের অ্যাক্টিভিটি টাস্কে নিয়েও। দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই সেই উত্তর ভুল আর সেই ভুল উত্তরই অন্ধের মতো লিখে যাচ্ছে পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৩৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনাকালে অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিয়মিত অনুশীলনের মধ্যে থাকে, সেই জন্য সব স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণিতে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ বা গৃহপাঠ দিচ্ছে শিক্ষা দফতর। কিন্তু শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বাংলা থেকে অঙ্ক পর্যন্ত নানা বিষয়ে সেই পাঠ দেওয়া হলেও সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে তৃতীয় ভাষায় (হিন্দি, সংস্কৃত, আরবি ইত্যাদি) তা দেওয়া হচ্ছে না। অ্যাক্টিভিটি টাস্ক না-দেওয়ায় অনেক পড়ুয়াই তৃতীয় ভাষা শিখতে পারছে না। এই ধরনের ভাষা শেখার প্রবণতা কমে যাচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, এর প্রধান কারণ, এই সব বিষয়ে পড়ুয়াদের কোনও পরীক্ষাই দিতে হচ্ছে না।

Advertisement

শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, মাধ্যমিকে যে-সব বিষয় থাকে, সেগুলির উপরেই এখন অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় ভাষার অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দেওয়ার ব্যাপারে ভবিষ্যতে ভাবনাচিন্তা করা হবে।

সমস্যা দেখা দিয়েছে ইউটিউবের অ্যাক্টিভিটি টাস্কের সমাধান নিয়েও। দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই সেই উত্তর ভুল আর সেই ভুল উত্তরই অন্ধের মতো লিখে যাচ্ছে পড়ুয়ারা। হাওড়ার দুইল্যা পাঁচপাড়া স্কুলের শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত জানান, অগস্টে দশম শ্রেণির বাংলার অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উত্তর পরীক্ষা করতে গিয়ে তিনি লক্ষ করেন, একটি প্রশ্নের উত্তর বেশির ভাগ পড়ুয়াই ভুল লিখেছে। এখন ক্লাসে পরীক্ষা হয় না। তাই এক পড়ুয়ার খাতা দেখে অন্য জনের টুকে লেখার সম্ভাবনা নেই। তা সত্ত্বেও সকলে একই ভুল করায় তিনি কয়েক জন পড়ুয়াকে ফোন করেন। সেই ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে বলে, ইউটিউবে যে-উত্তর লেখা ছিল, তারা সেটাই লিখেছে। সুমনাদেবী বলেন, “ওরা জানেই না যে, উত্তরটা ভুল। কারণ গল্পটা ওরা পড়েইনি।”

Advertisement

এ ভাবে ভুল শেখায় পড়ুয়াদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন কলকাতার সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষক-নেতা নবকুমার কর্মকার। তিনি বলেন, “কারা এই সব ভিডিয়ো বানাচ্ছেন, সেগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা কতটা— এ-সব ভাল ভাবে যাচাই করে তবেই ওই সব চ্যানেল দেখে পড়া এবং শিক্ষা নেওয়া দরকার। নইলে যে-উদ্দেশ্যে শিক্ষা দফতর অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দিচ্ছে, সেই উদ্দেশ্যটাই ব্যাহত হবে।”

শিক্ষকদের একাংশের মতে, একটি বিষয়ের অ্যাক্টিভিটি টাস্ক সব স্কুলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ফলে অ্যাক্টিভিটি টাস্কের ইউটিউব যাঁরা বানাচ্ছেন, তাঁদের একাধিক ভিডিয়ো বানাতে হচ্ছে না। প্রতিটি স্কুল আলাদা আলাদা অ্যাক্টিভিটি টাস্ক তৈরি করলে এই ব্যাপারে ভুলভাল ইউটিউব বানানোর প্রবণতা কমবে। রক্ষা পাবে পড়ুয়ারা।

কিন্তু এক শিক্ষাকর্তা জানাচ্ছেন, শিক্ষা দফতরের দেওয়া অ্যাক্টিভিটি টাস্কই সব স্কুলে দেওয়া হবে। স্কুল-ভিত্তিক আলাদা আলাদা অ্যাক্টিভিটি টাস্ক তৈরি করতে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement