ফাইল চিত্র।
মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে রাজ্য সরকারকে ১২.৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা বিবেচনা করার বার্তা দিল বিশ্বব্যাঙ্ক। তবে শর্ত হিসেবে এ বিষয়ে একটি স্বাধীন সমীক্ষক সংস্থাকে নিয়োগ করতে হবে রাজ্যকে। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, যে ভাবে রাজ্য সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক সুরক্ষার প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ বাড়ানোর পথে হাঁটছে, তাতে এই ঋণ পাওয়া গেলে আরও সুবিধা হবে।
প্রথম তৃণমূল সরকারের সময় থেকেই মহিলাদের ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করেছে রাজ্য। সরকারের দাবি, বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী বা হালে লক্ষ্মীর ভান্ডার মহিলাদের ক্ষমতায়নের পথে সহায়ক প্রকল্প। এতে যেমন মহিলাদের আয় সুনিশ্চিত করা সম্ভব, তেমনই তা নারী শিক্ষা-স্বাস্থ্যের উন্নতি, বাল্যবিবাহ রোধ বা সামগ্রিক অর্থনীতি সচল করার পথে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
তৃতীয় বারের জন্য সরকার গঠন করে সামাজিক ক্ষেত্রে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর পথে হেঁটেছে রাজ্য। এ ক্ষেত্রে সরকারের স্পষ্ট বার্তা, অন্য ক্ষেত্রগুলিতে অপ্রয়োজনীয় খরচ বাঁচিয়ে বা নতুন প্রকল্পের পরিকল্পনায় কড়াকড়ি করেও সামাজিক প্রকল্পগুলি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যদিও বিভিন্ন মহলের দাবি, লকডাউন পরিস্থিতি রাজ্যের অর্থনীতির উপরে আরও চাপ বাড়িয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, এর ফলে কী ভাবে সামলানো যাবে সামাজিক প্রকল্পের বিপুল খরচের বোঝা!
এই পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণ-বার্তা পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রাজ্য। প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, সাধারণত এই ধরনের ঋণ দীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্প সুদযুক্ত হয়ে থাকে। ফলে সামাজিক ক্ষেত্রে কাজ করার প্রশ্নে এই ধরনের ঋণ অনেক বেশি সুবিধাজনক। প্রসঙ্গত, সামাজিক সুরক্ষার প্রশ্নে বিধবা, বিশেষ ভাবে সক্ষম মহিলাদের জন্য রাজ্যের পদক্ষেপ এবং কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রকল্পগুলির উল্লেখও করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক।
বিশ্বব্যাঙ্ক জানাচ্ছে, রাজ্যের অর্থনীতি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৭-১৮ ও ২০২৮-১৯ আর্থিক বছরে রাজ্যের বৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৮.৯% এবং ১২.৬%। সেই সময়ে জাতীয় গড় ছিল যথাক্রমে ৭.২% এবং ৬.৮%। পাশাপাশি, শ্রমে মহিলাদের অংশীদারিত্বের দিক থেকেও জাতীয় গড়ের (২৩%) তুলনায় কম রয়েছে এ রাজ্যে, ১৬%। প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, নীতি নির্ধারণ, অবাধ সুবিধাদান পদ্ধতি, সামাজিক সুরক্ষায় পদক্ষেপ করা যাবে এই ঋণের সাহায্যে। স্বাধীন সমীক্ষক সংস্থা বাছাইয়ের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই আগ্রহপত্র চেয়েছে রাজ্য সরকার।