(বাঁ দিকে) সিভি আনন্দ বোস, ব্রাত্য বসু (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ইস্তফা দিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। মাস খানেক আগেই তাঁকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যপালের নির্দেশেই পদত্যাগ করেছেন অমিতাভ। গত কয়েক মাস ধরেই উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল বিকাশ ভবনের। সেই আবহেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপককে দায়িত্ব অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বোস।
কিন্তু শুক্রবার সেই তাঁর নির্দেশেই পদত্যাগ করেছেন অমিতাভ। একক ভাবে রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বেজায় চটেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের পর তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। উনিই তাঁকে নিয়োগ করেছিলেন। উনিই তাঁকে ইস্তফা দিতে বলেছিলেন। তা ছাড়া উনি উপাচার্যের সুযোগ সুবিধাও নিচ্ছেন না।’’
এই টানাপড়েনের আবহে শুক্রবার একটি টুইটও করেছেন ব্রাত্য। সেটি একটি প্রহসনধর্মী ছোট নাটিকা। অনেকের মতে, টুইটে ব্রাত্যের নিশানায় ছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
ঘটনাচক্রে শুক্রবারই বিধানসভায় উপাচার্য নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি তৈরি করতে একটি সংশোধনী বিল পাশ করেছে রাজ্য সরকার। বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল (সংশোধনী) বিল ২০২৩’ পাশ হল ১২০-৫১ ভোটে। তাই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বিলটি ফলপ্রসূ হবে, তাও তুলে ধরেছেন শিক্ষামন্ত্রী। যদিও বিল পাশের আগেই তা সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা। তাতেও বিল পাশ আটকানো যায়নি।
বিলটি পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে অধিবেশন থেকে বেরিয়ে এই বিলের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়কেরা। বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর ওই বিলে রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলেই তা আইনে পরিণত হবে। কিন্তু শুক্রবারের অধিবেশন শেষ হতেই বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে যায়। ওই বিলে রাজ্যপাল যাতে স্বাক্ষর না-করেন, সেই অনুরোধও জানান বিজেপির প্রতিনিধিরা। তাই উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা কি আদৌ কাটবে? তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে শিক্ষা মহলে।