ফাইল চিত্র।
বিজেপি পরিষদীয় দলে বিভেদ তৈরির জন্যই ভোটের ভুল হিসেবের ছক কষেছিল তৃণমূল। সোমবার আচার্য বিল নিয়ে ভোটাভুটিতে ভুল গণনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই এমন অভিযোগ করতে শুরু করেছেন বিজেপি বিধায়করা। সোমবার আচার্য বিলে ভোটাভুটির দাবি জানিয়েছিল বিজেপি পরিষদীয় দল। কিন্তু বিল নিয়ে স্পিকারের ফল ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। কারণ স্পিকার প্রথমে ঘোষণা করেন, বিলের পক্ষে ১৮২ এবং বিপক্ষে ৪০টি ভোট পড়েছে। কিন্তু সন্ধ্যায় জানানো হয়, ফল হয়েছে ১৬৭-৫৫। যদিও প্রথমে ফল ঘোষণার পর তা নিয়ে আদালতে যাওয়ার হুমকি দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সকালে স্পিকার ফল নিয়ে ভুলের কথা জানিয়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
ঘটনাচক্রে মঙ্গলবারও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটর পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে বসানোর বিল পাশ করা হয়। সেই বিলের আলোচনায় অংশ নিয়েও সোমবারের মতো মঙ্গলবার আর বিলের উপর ভোটাভুটি চাননি বিজেপি বিধায়করা। বরং আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর বক্তৃতা শুরু করার পরেই ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা।
পরে গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা অভিযোগ করেন তৃণমূলের ‘কৌশল’ নিয়ে। চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতেই ভোটাভুটির পর গণনায় গোলমাল করা হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়ার কথা বললে, পরে সঠিক ফল ঘোষণা করা হয়। আমরা এর মধ্যে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। তাই আমরা বেসরকারি বিল নিয়ে ভোটাভুটি না চেয়ে প্রতিবাদস্বরূপ ওয়াকআউট করেছি।’’ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘সোমবার ভুল ফল ঘোষণার পর তৃণমূলের মন্ত্রী বিধায়করা দাবি করতে শুরু করেছিলেন যে আমাদের বিধায়করা বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। যা পুরোপুরি অসত্য। তাই আমাদের আশঙ্কা, আগামী দিনগুলিতেও বিভিন্ন বিল নিয়ে ভোটাভুটি চাইলে সেখানেও আমাদের মধ্যে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা চালানো হতে পারে। তাই শাসকদলের এই মনোভাব জানার পরেই আমরা আগামী দিনে অন্য কোনও বিলের ক্ষেত্রেও ভোটাভুটিতে অংশ নেব কি না, তা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে।’’
যদিও, বিধানসভায় আচার্য বিলে ভোটাভুটিতে ভুল হওয়া নিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কাউন্টিংয়ে ভুল হয়েছিল। সিনিয়র একজন করেছিলেন। যিনি অবসরের কাছাকাছি সময়ে আছেন।’’ তা সত্ত্বেও স্পিকারের আশ্বাসের উপর আস্থা রাখতে পারছে না কোনও বিজেপি বিধায়ক।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।