C V Ananda Bose

রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত চরমে যেতে পারে! বোসের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনার ভাবনা তৃণমূলের

রাজ্যপালের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল। বিধানসভায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা যায় কি না, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে শাসকদল। যদিও এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:০২
Share:

বিধানসভায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে পারে তৃণমূল। — ফাইল চিত্র।

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনার ভাবনায় তৃণমূল। আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভার বাদল অধিবেশনের শেষ দিন। ওই দিন পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে আলোচনা হবে। সেই আলোচনায় অংশ নেবে তৃণমূল এবং বিজেপির পরিষদীয় দল। এখনও পর্যন্ত এই কর্মসূচি তৈরি রয়েছে। কিন্তু রাজ্যপাল যে ভাবে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন, তাতে এমন প্রস্তাব আসতেই পারে বিধানসভায়।

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্যপালের আচরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব বিধানসভায় তাঁর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা যায় কি না, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। বিধানসভা সূত্রে খবর, এখনও এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তৃণমূল পরিষদীয় দলকে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে গত জুলাই মাসে যখন বাদল অধিবেশন শুরু হয়েছিল, তখনই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে চেয়েছিল তৃণমূল পরিষদীয় দলের একাংশ। কিন্তু শেষমেশ শীর্ষ নেতৃত্বের সম্মতি না মেলায় সে বার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা হয়নি বিধানসভায়। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনা যেতেই পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

সাংবিধানিক ভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রয়েছেন রাজ্যপাল বোস। তাই শিক্ষা দফতরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রেখে চলার কথা। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসের পর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে রাজ্যপালের কোনও কথা হয়নি। যদিও, সম্প্রতি দু’বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এলেও, রাজ্য সরকার–-রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব মেটেনি।

Advertisement

একই সঙ্গে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ঠিক করে দিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। কয়েক দিন আগে এর মধ্যে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতী উপাচার্য হিসাবে নিজেই দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। রাজভবন সূত্রের খবর, রবিবার রাতে ওই ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কল্যাণী বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বেলগাছিয়ার পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়েরও অন্তর্বর্তী উপাচার্য মনোনয়ন করেছেন তিনি। নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ লাহিড়ীকে নিযুক্ত করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের এমন পদক্ষেপে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের দূরত্ব বেড়েছে।

এ ছাড়াও, ধনখড় জমানাতেই রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বসানোর বিল পাশ করেছিল রাজ্য সরকার। ধনখড় সেই বিলে স্বাক্ষর না করেই দেশের উপরাষ্ট্রপতি পদে চলে যান। অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশনও সেই বিলে স্বাক্ষর করেননি। আবার বোসও সেই বিল-সহ হাওড়া পুরসভার একটি সংশোধনী বিলে স্বাক্ষর না করায় রাজ্য সরকারের ক্ষোভ বেড়েছে। আর এ বার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ৮৮ জন বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজভবনে নাম সুপারিশ করেছিল নবান্ন। কিন্তু তাতে সায় না দিয়ে পাল্টা রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পুলিশের ডিজি (কারা)-কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমনই দড়ি টানাটানির জেরে শেষ পর্যন্ত বন্দিমুক্তি হয়নি। একের পর এক সংঘাতের কারণেই এ বার বিধানসভাতে রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনতে পারে শাসকদল।

আর এমন প্রস্তাব এলে তাঁরা কী করবেন? এই প্রশ্নের জবাবে বিরোধী বিজেপি পরিষদীয় দল বলছে, সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রস্তাব আনার কথা ঘোষণা করলে আমরা আমাদের অবস্থান জানিয়ে দেব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement