—ফাইল চিত্র।
প্রাথমিক শিক্ষকের নতুন চাকরিপ্রার্থীরা চান না পুরনো বঞ্চিতদের আবার নিয়োগ করা হোক। বরং তাঁরা চান, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য যে আসন বরাদ্দ করেছিল পর্ষদ, তাতেও সুযোগ দেওয়া হোক নতুনদেরকেই। এই মর্মে আগেও সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা করেছিলেন ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার তাঁরা নতুন একটি মামলা করে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীরা নতুন করে চাকরি পাওয়ার যোগ্যই নন। তাই তাঁদের মামলাটি যেন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলে ৩৯২৯টি পদে নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এই ৩৯২৯টি পদ বরাদ্দ করা হয়েছিল ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য। মমতা নিজে ঘোষণা করেছিলে ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের ১৬ হাজার ৫০০ পদে নিয়োগের কথা। পরে পর্ষদের তরফে এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তবে ১৬,৫০০ পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও নিয়োগ হয়েছিল ১২ হাজারের কিছু বেশি পদে। ফাঁকা থেকে যায় বাকি এই ৩৯২৯ পদে নিয়োগ। ওই শূন্যপদেই নিয়োগ চেয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীরা। যার শুনানির পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রায় দিয়েছিলেন ওই পদে ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদেরই নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ে আপত্তি তোলেন ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার্থীরা।
হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন টেটের নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের আইনজীবী চিত্তপ্রিয় ঘোষ সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিলেন, ‘‘২০২০ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। ওই নিয়োগের প্যানেলের মেয়াদও শেষ। মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে বকেয়া শূন্যপদে নিয়োগ করা যায় না। তাই নতুন নিয়োগের জন্য নতুন প্যানেল প্রকাশ করা হোক। আর প্রাথমিকের চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৩৯২৯ ওই শূন্যপদ জুড়ে দেওয়া হোক।’’ মঙ্গলবার এই মামলার সঙ্গেই আরও একটি মামলা করেছে তারা নিজেদের দাবির সপক্ষে। নতুন মামলায় চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ অনুযায়ীই পুরনো চাকরিপ্রার্থীরা আর ওই ৩৯২৯টি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। তাই ওঁদের মামলাটিই খারিজ করে দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, অগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্ট ভিন্রাজ্যের একটি মামলায় নির্দেশ দিয়েছিল, বিএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তেরা আর প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। শুধু ডিএলএড প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদেরই এই অধিকার আছে। মঙ্গলবার সেই নির্দেশকেই টেনে এনে ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার্থীরা নতুন মামলা করেছেন। তাঁদের দাবি, ২০১৪ সালের চাকরিপ্রার্থীদের থেকে আগে বিএডদের বাদ দেওয়া হোক। তাঁদের এ-ও দাবি যে হেতু ২০১৪ সালের চাকরিপ্রার্থীদের অধিকাংশই বিএড প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত, তাই প্রাথমিকের ৩৯২৯ পদে নিয়োগের মামলাটিও খারিজ হয়ে যাবে।
পাশাপাশিই ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৩৯২৯ শূন্যপদ যুক্ত করার আবেদনও করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের মামলায় যুক্ত হওয়ার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।