নদী ভাঙন নিয়ে বিরোধী বিজেপি পরিষদীয় দলের সঙ্গে কথা বলতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, মন্ত্রী শোভনদেবকে। ফাইল চিত্র।
নদী ভাঙন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠাতে বিরোধী দল বিজেপিকে প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাই এ বার একক উদ্যোগেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকার। প্রসঙ্গত, শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যের গঙ্গাভাঙন পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানোর প্রস্তাব এনেছিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী। এমন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক মনোজ টিগগা জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের প্রস্তাব পেলে অবশ্যই তাঁরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিষয়টি জানার পরেই শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের কাছে কী ধরনের প্রস্তাব পাঠাতে চায় রাজ্য, তা জানার পরেই সিদ্ধান্ত জানাবেন তিনি। গত ১২ ডিসেম্বর বিষয়টি নিয়ে ফোনে কথা হয় পরিষদীয় মন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতার। শোভনদেবের কাছে সরকারের তরফে লিখিত প্রস্তাব চান শুভেন্দু।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে বিরোধী দলনেতার দফতরে লিখিত ভাবে সরকারি প্রস্তাব পাঠিয়ে দেন শোভনদেব। সেই প্রস্তাব দফতর থেকে পাঠানো হয়েছিল বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। একটি কপি দেওয়া হয় বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতকের কাছে। তার পরেই তৃণমূলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে একক ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রতিনিধিদল পাঠানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে সরকারি স্তরে।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় নদী ভাঙন ক্রমেই ভয়াবহ চেহারা নিচ্ছে। তাই দ্রুতই এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় রাজ্য সরকার। তাই বিজেপি পরিষদীয় দলকে এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ায় রাজ্যকে নতুন করে এ বিষয়ে ভাবতে হচ্ছে।’’ উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সরকারের নিজস্ব প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথা বছর দেড়েক আগেই হয়েছিল। সে বার তৎকালীন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শিউলি সাহা-সহ কয়েক জন বিধায়ক জলশক্তি মন্ত্রকে রাজ্য সরকারের দাবি জানাতে গিয়েছিলেন। সে বার ঘাটাল ও কান্দি মাস্টার প্ল্যানের অর্থ বরাদ্দ করা নিয়ে তাঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিল্লিতে। এ বারও তেমনই পরিকল্পনা নিতে পারে রাজ্য সরকার। নদী ভাঙন নিয়ে বিরোধী বিজেপি পরিষদীয় দলের সঙ্গে কথা বলতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, মন্ত্রী শোভনদেবকে। তিনি বর্তমানে বিশেষ কাজে রাজ্যের বাইরে রয়েছেন। কলকাতায় ফিরেই তিনি এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।