কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
স্কুল নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে চার্জ গঠনের অনুমতি দেওয়া নিয়ে বক্তব্য জানাতে পারল না রাজ্য সরকার।
এই বক্তব্য জানতে চেয়ে সোমবার রাজ্যকে ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। মঙ্গলবার রাজ্যের কৌঁসুলি এজলাসে এসে জানান, জানুয়ারি মাসে মুখ্যসচিব দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই তাঁকে নথিপত্র দেখে বক্তব্য পেশের সময় দেওয়া হোক। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের কর্তারা আসার ফলে মুখ্যসচিব ফাইল দেখার সময় পাচ্ছেন না বলেও তিনি জানান।
রাজ্যের এই বক্তব্যশুনে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত। বিচারপতি বসাক রাজ্যের কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হচ্ছে। এখনও আপনার মুখ্যসচিব ফাইল দেখার সময় পাননি? তবে তিনি ওই ফাইল দেখতে পারবেন এবং তাঁর কবে সেই নথি দেখে কোর্টকে জানানোর সময় হবে তা নিয়েও প্রশ্ন করেছে কোর্ট। দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিচারপতি বসাক মন্তব্য করেন, ‘‘আপনারাই আমাদের পদক্ষেপ করতে বাধ্য করছেন। কবে জানাতে পারবেন তাও বলতে পারছেন না। তা হলে ওঁকে কোর্টে ডেকে পাঠাই?’’
এ দিন রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি বসাকের মন্তব্য, ‘‘অজুহাত দেবেন না। আপনারা ফাইল চেপে বসে থাকবেন এবং আমরা তা বসে বসে দেখব? এত দিন ধরে কী করেছেন?’’ কোর্টের নির্দেশ, রাজ্যের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আজ, বুধবার কোর্টকে জানাতে হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার অনুমতি দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখে আদতে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করছে বলে অভিযোগ। আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, চার্জ গঠন ঝুলে আছে এই যুক্তিতে অভিযুক্তদের জামিনের পথ প্রশস্ত হতে পারে। কারণ, রাজ্য অনুমতি দিলে নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন হবে। অনুমতি খারিজ করলে বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হবে। তদন্তে প্রমাণ থাকলে উচ্চ আদালত চার্জ গঠনের নির্দেশ দিতেই পারে।
এ দিন শুধু রাজ্য সরকার নয়, এসএসসি-ও তিরস্কৃত হয়েছে আদালতে। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অন্যতম আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, নিয়োগ সম্পর্কে কী নিয়ম আছে তা স্পষ্ট করে জানাতে না পারায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত।