মৃত ব্যক্তিদের রেশন কার্ড চিহ্নিত করতে চায় খাদ্য দফতর। প্রতীকী ছবি
পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও সদস্যের মৃত্যুর মানুষের কথা রেশন ডিলারকে জানানো হয়নি। মৃত সেই মানুষটির নামেই দিব্যি উঠছে রেশন। এ বার সেই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছে খাদ্য দফতর। গত কয়েক মাস ধরে মৃত রেশন গ্রাহকদের চিহ্নিত করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। পুরসভা ও পঞ্চায়েতের 'ডেথ রেজিস্টার' দেখে মৃত রেশন গ্রাহকদের চিহ্নিত করছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা। দফতরের স্থানীয় অফিসের আধিকারিকদের পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃত রেশন গ্রাহকদের চিহ্নিত করার জন্য নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
কয়েক মাস আগে সব জেলাশাসক ও কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল, নির্দিষ্ট একটা সময়ে স্বাভাবিক মৃত্যুর হারের থেকে কত কম রেশন কার্ড মৃত্যুজনিত কারণে বাতিল হয়েছে। এর পর উদ্যোগী হয়ে ২৫ লক্ষ মৃত মানুষের কার্ড ব্লক হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর মৃত ব্যক্তিদের তালিকা সম্বলিত যে পোর্টাল তৈরি করেছে সেটি চিহ্নিতকরণের কাজে খুবই কার্যকরী হয়েছে বলে জানিয়েছেন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা।
স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টাল, পুরসভা ও পঞ্চায়েত থেকে মৃত মানুষের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে সেই তথ্য ধরেই রেশন গ্রাহকদের কার্ড ব্লক করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে ২৫ লক্ষ মৃত রেশন গ্রাহককে চিহ্নিত করে তাঁদের কার্ডগুলি ‘ব্লক’ করা হয়েছে। ব্লক হওয়া কার্ডগুলির জন্য খাদ্য বরাদ্দ বন্ধ হওয়ায় বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হয়েছে সরকারের। তবে প্রয়াত রেশন গ্রাহকদের কার্ডগুলি পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে না। খাদ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, ‘‘পরিবারের পক্ষ থেকে যে হেতু মৃত্যুর কথা জানিয়ে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণের মাধ্যমে কার্ড বাতিল করা হয়নি, তাই এই ধরনের কার্ডগুলি ব্লক করে রাখা হয়েছে। কারণ কখনও যদি দেখা যায় ওই ব্যক্তির আসলে মৃত্যু হয়নি, তা হলে কার্ড পুরোপুরি বাতিল হলে খাদ্য দফতরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে পারে। ব্লক বা নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া কার্ডের গ্রাহক নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করলেই কার্ড চালু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্তা। সঙ্গে খাদ্য দফতর থেকে পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে, মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে রেশন কার্ড 'সারেন্ডার' করা হয়েছে— এই বিষয়টি যেন নিশ্চিত করা হয়।