—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হতেই কার্যকর হয়েছে আদর্শ আচরণবিধি। সেখানে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট বার্তা, প্রচারে ‘অর্থশক্তির জমকালো প্রদর্শন’ থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী অতিরিক্ত বড় মাপের কাটআউট, হোর্ডিং, ব্যানার ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এই নির্দেশনামা থেকেও। প্রথমত, তা হলে ব্যানার বা কাট-আউটের মাপ কী হবে? দ্বিতীয়ত, বড় হোর্ডিং বলতেই বা ঠিক কী বোঝানো হচ্ছে? সর্বোপরি, প্রচারে কত টাকা খরচ করা যাবে? এ সবের জবাব অবশ্য কমিশনের নির্দেশিকায় নেই। আর সেখানেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপর্ব। মহকুমা ও জেলাস্তরে সর্বদল বৈঠক হয়েছে। মেদিনীপুরেও জেলাস্তরের সর্বদল বৈঠক হয় শুক্রবার। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলিকে আদর্শ আচরণবিধি সম্বন্ধে অবহিত করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরী বলেন, ‘‘এই সময়ে কী করা যাবে, কী যাবে না, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সে সব জানানো হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট নির্দেশিকা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার জুড়ছেন, ‘‘সর্বদল বৈঠকে সব ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
রাজনৈতিক দলগুলির জন্য, প্রার্থীদের জন্য প্রচারের খুঁটিনাটি জানানো হয়েছে ওই আচরণবিধিতে। কোথায় পোস্টার সাঁটানো যাবে থেকে কত ক্ষণ লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে— সবই বলা আছে। তবে তার পরেও প্রশ্ন থাকছে নানা বিষয়ে। যেমন অর্থশক্তির জমকালো প্রদর্শন বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তার বিশদ ব্যাখ্যা নেই। হোর্ডিং, কাট-আউটের মাপ নিয়েও নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই। মেদিনীপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ রায় বলছেন, ‘‘বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধোঁয়াশা রয়েছে। আমরা সে সবের ব্যাখ্যা চেয়েছি। এখনও পাইনি।’’ সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তাপস সিংহের আবার আশঙ্কা, ‘‘নির্দিষ্ট করে কিছু বলা নেই মানে বিরোধীদের আটকানোর চেষ্টা হবে। আর তৃণমূলের জন্য সব ছাড়।’’
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েতে আমরা জমকালো প্রচার করি না। বিপুল খরচ করি না। দলের প্রার্থীরা তাঁদের সামর্থ্য মতো প্রচার করে থাকেন।’’ আর জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নজরদারি থাকবে। আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।