State Election Commission

কোনও প্রশ্নেরই জবাব নেই কমিশনের কাছে, দাবি বিরোধীদের

কমিশন সূত্রের বক্তব্য, এখনও স্পর্শকাতর এলাকা যাচাই করার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তবে পুলিশ বা গোয়েন্দা সমীক্ষা নিরন্তর চলছে। অন্য রাজ্য থেকে সশস্ত্র বাহিনী আনার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রাজ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ০৭:১১
Share:

রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ফাইল চিত্র।

‘কমিশন সব প্রশ্নেই নিরুত্তর’— পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগই তুললেন বিরোধীরা। শাসক দল তৃণমূল অবশ্য অশান্তির দায় বিরোধীদের উপরে চাপিয়ে সেই বিষয়ে কমিশনকে নজর রাখার অনুরোধ করেছে।

Advertisement

কমিশন সূত্রের বক্তব্য, এখনও স্পর্শকাতর এলাকা যাচাই করার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তবে পুলিশ বা গোয়েন্দা সমীক্ষা নিরন্তর চলছে। পাশাপাশি, অন্য রাজ্য থেকে সশস্ত্র বাহিনী আনার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল রাজ্য। নবান্ন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত বিহার, ঝাড়খণ্ড, পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুকে পুলিশ পাঠাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মাথায় পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা করে দিয়েছেন রাজীব সিন্‌হা। সর্বদলীয় বৈঠক না ডেকে কী ভাবে ভোট ঘোষণা কর হয়েছে, তা নিয়ে তখনই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন। মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক চলার পরে বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশি ব্যবস্থা, মনোনয়ন প্রক্রিয়া, ভোট নিরাপত্তা, অশান্তি ঠেকানো নিয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি কমিশন। এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, আর ২ দিনে মোট ৮ ঘণ্টা মনোনয়নের সময় রয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, এই সময়ের মধ্যে কোন জাদুতে সাত লক্ষ মনোনয়ন জমা নেবে কমিশন? যদিও কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, ৪০৭টি মনোনয়ন কেন্দ্রের এক একটিতে ৮ থেকে ১৫টি টেবল রয়েছে। ফলে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। সঙ্গে তাদের দাবি, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-সহ যে অভিযোগগুলি বিরোধীরা জমা দিয়েছেন সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Advertisement

রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “ভোটের আগে বৈঠকটা হওয়া উচিত ছিল। কমিশন প্রস্তুত বলছে। কিন্তু অনেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারছেন না। রাজ্য পুলিশের কথা জানতে চাইলে কমিশনার জানাচ্ছেন, তিনি মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজি-র উপরে আস্থা রাখছেন। সিভিক ভলান্টিয়ারেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। সে ব্যাপারেও কোনও সদুত্তর নেই।” কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচীর বক্তব্য, “আদালত বলেছে, রাজ্য পুলিশে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মী না থাকার কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সুপারিশ করা যাবে। এমনকি কেন্দ্র সেই বাবদ টাকাও চাইবে না। তার পরেও বাহিনী না আনলে তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই ধরে নেওয়া হবে। কমিশনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।” সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ীর কথায়, “৪৬ হাজার লাঠিধারী পুলিশ দিয়ে এত বুথের নিরাপত্তা কী ভাবে দেওয়া সম্ভব! কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে থেকে শাসক দলের সুবিধে করে দিচ্ছে।” যদিও তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের পক্ষে সওয়াল করেছি। যাতে প্রত্যেক মানুষ ভোট দিতে পারেন।”

এ দিনই উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড়ের পরিস্থিতি। ফলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে ফের সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এ ক্ষেত্রে শাসক দল, প্রশাসন এবং কমিশনের ভূমিকাকে এক বন্ধনীতে রাখছেন তাঁরা। বিজেপি নেতা শমীকের হুঁশিয়ারি, “এ বার আর একতরফা দখলদারি হবে না। লড়াই হবে। কর্মীদের সেই বার্তাই দেওয়া হবে।” কৌস্তভের অভিযোগ, “ভাঙড়ের পরিস্থিতি কমিশন এবং পুলিশের ব্যর্থতা।”

শাসক দলের পাল্টা দাবি, অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে বিরোধী-ষড়যন্ত্রই। অরূপের পাল্টা অভিযোগ, “সর্বত্র পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি ছড়াচ্ছেন বিরোধীরা। যাতে সরকার এবং শাসক দলের বদনাম হয়। সেই বিষয়ে কমিশনকে নজর রাখার অনুরোধ করেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement