West Bengal Health Department

প্রশ্ন স্বাস্থ্যের স্থায়ী কমিটির ভূমিকায়

ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগের মোকাবিলায় প্রাতিষ্ঠানিক নজরদারির উপরেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। আর সেই সূত্রেই এই কাজে বিধানসভার স্থায়ী কমিটির ভূমিকা নিয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৪
Share:

স্বাস্থ্য দফতর। —ফাইল চিত্র।

চলতি বিধানসভার অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও একটি রিপোর্টও জমা দিতে পারেনি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি। তাই ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির সময়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ এই নজরদারি কমিটি। রিপোর্ট দেওয়া দূরে থাক, রাজ্যের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও জরুরি বিষয় নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে নির্দিষ্ট কোনও আলোচনাও হয়নি ওই কমিটির বৈঠকে।

Advertisement

ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগের মোকাবিলায় প্রাতিষ্ঠানিক নজরদারির উপরেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। আর সেই সূত্রেই এই কাজে বিধানসভার স্থায়ী কমিটির ভূমিকা নিয়ে নির্দিষ্ট প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, বিধানসভার বিধায়কদের নিয়ে গঠিত এই কমিটির সামগ্রিক ভাবে কাজই হল, রাজ্যের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় ‘নজর’ রাখা এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পরামর্শ দেওয়া।

সূত্রের খবর, ২০২১ সালে ১৭তম বিধানসভা শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই কমিটির কোনও রিপোর্টই জমা পড়েনি। এ ব্যাপারে কমিটির চেয়ারম্যান নির্মল মাজির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। টেক্সট মেসেজের উত্তরও দেননি। তবে কমিটির অন্যতম সদস্য তৃণমূল বিধায়ক অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘নথি সংগ্রহের কাজ চলছে। তার পরে রিপোর্ট দেওয়া হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ডেঙ্গির প্রকোপের সময়ে স্বাস্থ্য দফতরের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হওয়ার পাশাপাশি বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে পূর্ণ দায়িত্বের স্বাস্থ্যমন্ত্রী না থাকা নিয়েও। স্থায়ী কমিটির নিষ্ক্রিয়তাও তাদের হাতিয়ার।

Advertisement

শুধু রিপোর্টের ক্ষেত্রেই নয়, সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পর্যালোচনায়ও নানা খামতির অভিযোগ সামনে এসেছে এই কমিটি নিয়ে। চলতি বিধানসভা শুরুর পরে নিয়মিত কিছু বৈঠক হলেও গত এক-দেড় বছর ধরে তা-ও হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে। কমিটির ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১০ জন চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য পরিষেবা বা পরিস্থিতি নিয়ে এই অনীহা কেন? এক চিকিৎসক-সদস্য বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আলোচনা তো দূরের কথা, শেষ কবে কমিটির বৈঠক হয়েছে তা-ই মনে করতে পারছি না।’’ তাঁর মত, ‘‘অভিজ্ঞ ও দক্ষ চিকিৎসক থাকা সত্ত্বেও কমিটির তরফে আমরা কোনও গঠনমূলক ভূমিকা নিতে পারিনি।’’

এই কমিটির অন্যতম সদস্য বিজেপি বিধায়ক কমলাকান্ত হাঁসদা বলেন, ‘‘অনেক দিন কমিটির বৈঠকে যাইনি। আমাদের অন্তত দু’টি বৈঠকে যেতে হয়। আমি অন্য দু’টিতে যাই।’’ বিরোধী দলের সচেতক বিজেপির মনোজ টিগ্গার অভিযোগ, ‘‘কমিটিগুলির কাজ বাস্তব পরিস্থিতি দেখে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া। আর সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে সব কিছু আড়াল করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিধানসভায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি শেষ রিপোর্ট জমা দিয়েছিল ২০১৮ সালে, ১৬তম বিধানসভায়। স্বাস্থ্য দফতর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকা সত্ত্বেও এই পরিস্থিতিতে খুশি নন শাসক দলের বিধায়ক সদস্যদের অনেকেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement