ছবি এপি।
এক দিকে বজ্রগর্ভ মেঘ, তার উপরে বায়ুমন্ডলে হাওয়ার স্রোত। দুইয়ের মিশেলেই বুধবার প্রায় সেঞ্চুরি করে ফেলেছিল কালবৈশাখীর ঝড়ের বেগ। ঝড়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করে এমন কথাই জানাচ্ছেন আবহবিদেরা।
আবহবিজ্ঞানীদের মতে, অনেক সময়ই বিরাট আকারের মেঘ তৈরি হয় কিন্তু বায়ুর স্রোত যা মেঘকে ঠেলে নিয়ে আসে তার গতিবেগ বেশি না হওয়ায় এমন প্রবল ঝড় হয় না।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, গত কদিন ধরে ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় জুড়ে প্রবল গরমের দাপট চলছে। তার পরে বাতাস গরম হয়ে বায়ুমন্ডলের উপরে উঠে বিরাট মাপের মেঘপুঞ্জ তৈরি করেছিল এবং গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে একটা মালার মতো পরপর মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তার সঙ্গে মেঘকে ঠেলে আনার বায়ুস্রোতের বেগ ছিল ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার। দুই মিলে প্রায় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছিল কালবৈশাখী। ‘‘বজ্রগর্ভ মেঘের নিজস্ব একটা ঝড়ের বেগ থাকে। তার সঙ্গে মেঘকে ঠেলে আনা বায়ুর বেগ জুড়ে যায়। তাতেই ঝড়ের বেগ বেড়ে যায়,’’ বলছেন তিনি।
আরও পড়ুন: উপড়ে পড়া গাছ রাখতে সেনার অনুমতি পেল না কলকাতা পুরসভা
সদ্য আমপান গিয়েছে। প্রবল ঝড়ের স্মৃতি এখনও টাটকা মানুষের মনে। তার উপরে এমন কালবৈশাখী মানুষের মনে আশঙ্কা বাড়িয়েছে। তবে আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, এমন জোরালো কালবৈশাখী বিরল হলেও অস্বাভাবিক নয়। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে একটা কালবৈশাখী হয়েছিল কলকাতায় যার সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘন্টায় ১১৬ কিলোমিটার। আয়লার সময়ে কলকাতায় সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘন্টায় ১১০ কিলোমিটার। তাকেও প্রায় ছাপিয়ে গিয়েছিল সেই বৈশাখী ঝড়। গত বছর এপ্রিল মাসেও কলকাতায় ঘন্টায় ৯৯ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয়েছিল। তবে সেটিকে চরিত্রগত ভাবে কালবৈশাখী বলতে নারাজ আবহবিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: আট দিন পরেও টানাটানির বিদ্যুৎ
গণেশবাবু জানাচ্ছেন, পূর্ব ভারতের আবহাওয়ার যা পরিস্থিতি তাতে আগামী রবিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।