—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ উত্তরবঙ্গের একটি হাসপাতালের চিকিৎসকের ভূমিকা সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে।
তদন্তকারীদের কথায়, ঘটনার কয়েক দিন আগেই উত্তরবঙ্গ থেকে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ ওই চিকিৎসক কলকাতায় এসে ওঠেন। ঘটনার দিন সকালে এবং তার পরের দিনও তিনি আর জি কর হাসপাতালে সন্দীপের সঙ্গে ছিলেন। মৃতদেহ উদ্ধার থেকে সুরতহাল, ময়না তদন্ত এবং মৃতদেহ দাহ করা পর্যন্ত সন্দীপের ঘনিষ্ঠ ওই চিকিৎসক সর্বত্র হাজির ছিলেন বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার সকালে সন্দীপকে ফের তলব করা হয় এবং ওই চিকিৎসকের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে সন্দীপ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সন্দীপের বয়ান অনুযায়ী, বিষয়টি কাকতালীয়। নিজস্ব একটি কাজে কলকাতায় এসেছিলেন ওই চিকিৎসক। সে ক্ষেত্রে নানা কাজের সময়ে তিনি হয়তো আর জি করে উপস্থিত থাকতে পারেন। তদন্তকারীদের কথায়, সন্দীপের বয়ানে একের পর এক অসঙ্গতি ধরা পড়ছে। আরও কয়েক দফায় তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা হবে। সিজিও কমপ্লেক্স ছেড়ে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বেরিয়ে যান সন্দীপ। সূত্রের খবর, আগামিকাল তাঁকে দুর্নীতির মামলায় নিজ়াম প্যালেসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, উত্তরবঙ্গের ওই চিকিৎসক সন্দীপের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সে ক্ষেত্রে হাসপাতালে তেমন কিছু ঘটনা ঘটতে পারে আন্দাজ করে সন্দীপ ওই চিকিৎসককে কলকাতায় ডেকে এনেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার কয়েক দিন পরে অবশ্য ওই চিকিৎসক উত্তরবঙ্গের হাসপাতালে ফিরে গিয়েছেন। ওই চিকিৎসকের নাম ও ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, তাঁকে খুব শীঘ্রই তলব করা হবে। প্রয়োজনে সন্দীপের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
তদন্তকারীদের অনুমান, সন্দীপ নিজে ওই দিন পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছিলেন। ফোনে প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখছিলেন তিনি। তাই হয়তো মৃতদেহের ময়না তদন্ত ও সুরতহাল-সহ সব বিষয়ে পর্যবেক্ষণের জন্য নিজের ঘনিষ্ঠদের কাজে লাগিয়েছিলেন। ওই দিন কলকাতার অন্য কয়েকটি হাসপাতালের সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকেরাও আর জি কর হাসপাতালে এসে সেমিনার হলে, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির সময়ে এবং ময়না তদন্তের সময়ে উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি।
এ দিন কলকাতা পুলিশের এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার-সহ চার জন পুলিশকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সন্দীপের ঘনিষ্ঠ ফরেন্সিক মেডিসিনের শিক্ষক-চিকিৎসক দেবাশিস সোমকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসার সময়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, একটি ভিডিয়ো ফুটেজে আপনাকে সেমিনার রুমে দেখা যাচ্ছে! উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমার ওখানে পোস্টিং ছিল।’’