প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গড়ার আশ্বাস দিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। প্রতীকী ছবি।
২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের ডিএলএড কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষার প্রথম দিনের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠল। পরীক্ষার কিছু ক্ষণ আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সোমবার ছিল ওই পরীক্ষা। প্রশ্নফাঁস নয়, সরকার ও পর্ষদের ভাবমূর্তি নষ্টের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ ডিএলএড কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। পরীক্ষা চলে দুপুর ২টো পর্যন্ত। অভিযোগ, সোমবার সকাল ১০টা ৪৭ মিনিট নাগাদ হোয়াটসঅ্যাপে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষাকেন্দ্রে পড়ুয়াদের যে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে, আর হোয়াটসঅ্যাপে যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়েছে, দুটোই এক বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও এই দাবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
কী ভাবে পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হল, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘এই অভিযোগকে পর্ষদ হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না। তদন্ত কমিটি তৈরি করছি। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের কোনও ক্ষতি হবে না। এ নিয়ে যদি পর্ষদ কোনও সিদ্ধান্ত নেয় আগামী দিনে, তা হলে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হবে না।’’ এটা প্রশ্নফাঁসের ঘটনা নয়। সরকার ও পর্ষদের ভাবমূর্তি নষ্টের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পর্ষদ সভাপতি। পরীক্ষা বাতিল করা হবে কি না, এ নিয়ে কিছু জানাননি তিনি। নিয়ম মেনেই পরীক্ষা হয়েছে বলে দাবি পর্ষদ সভাপতির। আগামী দিনে কোনও অনৈতিক কাজ হলে পর্ষদ কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন গৌতম।
প্রসঙ্গত, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তকারীদের নজরে এসেছে ডিএলএড কলেজ। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের গ্রেফতারির পর ডিএলএড কলেজে ভর্তির জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি নজরে আসে বলে দাবি করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে যে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত তিনটি শিক্ষাবর্ষে টেটের জন্য ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিতে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের থেকে নিয়মিত ভাবে টাকা নেওয়া হয়েছে। মূলত ডিএলএড প্রশিক্ষণের যে ৬০০টি কলেজ রয়েছে, সেখানে অফলাইনে ভর্তির জন্যই নেওয়া হত ওই অর্থ।
ডিএলএড কোর্সে ভর্তির জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে অফলাইনে ভর্তির জন্য প্রায় ২১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল। মনীষীদের নামে যে সব ডিএলএড কলেজ রয়েছে, সেখান থেকেও টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি। এই অভিযোগের তদন্তের প্রেক্ষাপটে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ নয়া মাত্রা যোগ করেছে।