মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী। ফাইল চিত্র।
কখনও ব্যয়বরাদ্দের পরিমাণ, কখনও বা নামকরণ, সামাজিক প্রকল্পগুলি নিয়ে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য। সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বিরোধী বিধায়কের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী অবশ্য জানালেন এ বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁদের সরকারের কোনও সংঘাত নেই।
সোমবার বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী সরকারের কাছে জানতে চান, যে সব সামাজিক প্রকল্প কেন্দ্রের তরফে চালু করা হয়েছে, সেগুলি রাজ্য সরকার আলাদা করে চালু করতে চাইছে কেন? প্রশ্নের উত্তর দিতে উঠে নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, কেন্দ্র শুধু দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের জন্যই প্রকল্পগুলি চালু করেছে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রাজ্যের তৃণমূল সরকার প্রয়োজনীয়তা বুঝে সব শ্রেণির মানুষের জন্যই এই প্রকল্প চালু করেছে। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোনও বিরোধ নেই, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মন্ত্রী।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, রাজ্যের প্রায় ৩২ লক্ষ মানুষ বিধবা ভাতা এবং বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন। ২০১৯ সালের তুলনায় রাজ্যে সামাজিক প্রকল্পের উপভোক্তার সংখ্যা ২০.২২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, সামাজিক প্রকল্প নিয়ে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকার। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি অভিযোগ করেছে কেন্দ্রের প্রকল্পগুলির নাম বদলে নিজেদের নামে চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, অধিকাংশ প্রকল্পেই রাজ্য সিংহভাগ ব্যয়বরাদ্দ করে থাকে। তাই রাজ্যের ঠিক করে দেওয়া নাম অনুসারেই প্রকল্পগুলির নাম হওয়া উচিত।
প্রকল্পগুলিকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। বিজেপির অভিযোগ, পঞ্চায়েত স্তরে দলীয় আনুগত্য দেখে প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ‘অস্পষ্টতা’ থাকায় ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্যের পাল্টা অভিযোগ, পরিকল্পিত উপায়ে প্রকল্পের ‘প্রাপ্য’ টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এ নিয়ে বারবার সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন। এই আবহে রাজ্যের তরফে জানানো হল, সামাজিক প্রকল্পের বিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের কোনও সংঘাত নেই।