বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা বেশিরভাগই শাসকদলের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ছবি: সংগৃহীত।
ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নিয়ে রাজনীতিকরণের অভিযোগ পৌঁছে গেল বিকাশ ভবনের দরজায়। বৃহস্পতিবার গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস গ্রুপের সদস্যরা বিক্ষোভ দেখালেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সল্টলেকের দফতরে। মূলত বিভিন্ন জেলার কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে থাকা যে ১০৫ জন শিক্ষক বাদ পড়েছেন, তাঁরাই বিক্ষোভে শামিল হন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা বেশিরভাগই শাসকদলের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু তা সত্ত্বেও পর্ষদ তাঁদের অন্যায় ভাবে বাদ দিয়েছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই তাঁরা বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে ৩৮তম বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার একটি নির্দেশিকা জারি হয়। সেই নির্দেশিকার সঙ্গে রাজ্য ও জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কো-অর্ডিনেটরদের নামও ঘোষণা করা হয়। তাতে দেখা যায় ২০১৯ সাল থেকে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে থাকা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে শাসক-বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কমিটি নিয়েও রাজনীতি করছে শাসক দলের একাংশ। রাজ্য-সহ প্রত্যেকটি জেলার কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে শাসকদলের শিক্ষা সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের। তাদের আরও অভিযোগ সম্প্রতি বিদ্যালয় ক্রীড়া পরিচালনার নিয়ামক সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল ফর স্কুল গেমস অ্যান্ড স্পোর্টসের যে পরিচালন সমিতির নাম ঘোষিত হয়েছে তাতেও একই ঘটনার ঘটেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সিদ্ধান্ত হয় প্রতি মহকুমা থেকে ২ জন করে ক্রীড়া প্রেমী শিক্ষককে বাছাই করা হয়েছিল। মোট ১০৫ জনকে বাছাই দেওয়া হয় নিয়োগপত্রও। রাজ্য, জেলা ও চক্রের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরিচালনার জন্য নিয়োগ করা হয়। এরপর জাতীয় পর্যায়ের ক্রীড়ার প্রশিক্ষকদের দিয়ে প্রশিক্ষণও হয় তাঁদের। ২০১৯ সালে স্কুল, জেলা ও রাজ্য স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় তাঁদের তত্ত্বাবধানেই। কিন্তু পরে করোনার জন্য দু’বছর করোনার জন্য বন্ধ ছিল স্কুল স্তরের যাবতীয় প্রতিযোগিতা। কিন্তু এ বছর কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ওই ১০৫ জনকেই বাদ দিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে। তারপরেই ক্ষোভ পুঞ্জীভুত হয় বাদ যাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে। মূলত বাদ যাওয়া শিক্ষকরাই ক্ষোভ দেখিয়েছেন বিকাশ ভবনে।
বৃহস্পতিবার তাঁরা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি পার্থ কর্মকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানান বাদ যাওয়া শিক্ষকরা। ক্রীড়া প্রতিযোগিতার কমিটি থেকে বাদ পড়া গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস গ্রুপের মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়েছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা ৫ বছর নিজেদের পদে বহাল থাকবেন। কিন্তু এ বার কিছু না জানিয়েই আমাদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছিলাম, যাঁদের যুক্ত করা হয়েছে তাঁদের তো ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের কোনও প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা নেই। তাই আমাদের যুক্ত করে দেওয়া হোক তাঁদের সঙ্গে। কিন্তু আমাদের সেই প্রস্তাবও প্রত্যাখান করেছে পর্ষদ।’’ এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পর্ষদের কোনও কর্তা।