—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের নির্দেশে রাজ্যের প্রত্যেক জেলার দেশ-বিদেশের পর্যটকদের তথ্য প্রথমবার নথিবদ্ধ করার প্রক্রিয়া অবশেষে শুরু হল। গত বছরের শেষে পর্যটন দফতরের তরফে রাজ্যের প্রত্যেক জেলাশাসককে তা জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। সম্প্রতি রাজ্যস্তরে এজেন্সিও নিয়োগ করে সেই কাজ শুরু করা হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। তবে লোকসভা ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে তাতে কিছু সমস্যা হতে পারে। তা ধরে নিয়েই এগোতে বলা হয়েছে।
গত বছর এপ্রিলে মন্ত্রকের নির্দেশের পরে দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের তথ্য সংগ্রহের জন্য পেশাদার সংস্থা নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য পর্যটন দফতর। এই সম্পর্কিত নির্দেশিকাও জারি করা হয়। দু’দফায় সমীক্ষা করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে স্থির হয়। রাজ্যের পর্যটনের সঙ্গে জড়িত ২৩টি জেলায় কাজ শুরুর পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে তা শুরু করতে প্রায় আট মাস লেগে যাওয়ায় কাজের গতি নিয়ে দফতরের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে।পর্যটন দফতরের এক সচিবের কথায়, ‘‘দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। বিভিন্ন শিল্প সম্মেলন, শীর্ষ বৈঠক, বিনিয়োগ প্রস্তাব, পরিকাঠামো তৈরির জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। এ রাজ্যে তা ঠিকঠাক ছিল না। এ বার তার কাজ হচ্ছে। তবে এজেন্সি নিয়োগ করে কাজ শুরু করতে সময় লেগেছে।’’ মন্ত্রক সূত্রের খবর, রাজস্থান, কেরল, গোয়া, হিমাচলপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে পর্যটনের তথ্যভান্ডার রয়েছে। দেশের যে কোনও প্রান্তে সম্মেলন, সভা, বৈঠক বা প্রদর্শনীতে রাজ্যগুলি সুন্দর ভাবে সরকারি তথ্য দিয়ে পর্যটনের হিসেবের তথ্য তুলে ধরে। সেখানে এ রাজ্যে আনুমানিক হিসাবেই কাজ চলছে এখনও। বেশ কয়েক বছর আগে এক দফায় জেলা প্রশাসনগুলির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টাও শুরু হয়েছিল। তবে প্রশাসনের তরফে জেলায় জেলায় তা খুব একটা ভাল করে করা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ। একাধিক কাজের ফাঁকে তথ্য সংগ্রহের কাজ এগোয়নি।
করোনার পর রাজ্য পর্যটন দফতর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলা, সভায় যোগ দিয়েছে। সেখানে পর্যটকদের তথ্য রাখাটা জরুরি তা বোঝা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নির্দেশের পরে সমীক্ষা করানো হবে বলে স্থির হয়। প্রথম দফার সমীক্ষা এক মাসের হবে। দ্বিতীয় দফায় তা ৬ থেকে ১২ মাসের করা হবে। কলকাতা-সহ রাজ্যের ২৩টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রথম দফায় কোন জেলার কত সংখ্যক পর্যটক বেশি আসছেন, তা দেখে দ্বিতীয় দফায় তথ্য সংগ্রহ করে নিযুক্ত এজেন্সির প্রতিনিধিরা। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বাস টার্মিনাস, বিমানবন্দর, রেল স্টেশনের তথ্য ছাড়াও লজ, হোটেল, রিসর্ট বা পাহাড়ের ক্ষেত্রে হোম-স্টে থেকে তথ্য সংগৃহীত হবে। সরকারি এবং বেসরকারি দুই জায়গা থেকেই তথ্য নেওয়া হয়েছে। সীমান্তের ইমিগ্রেশন পয়েন্ট এবং পাসপোর্ট দফতরথেকেও তথ্য থাকবে। কী ধরনের পর্যটক, কতদিন কোথায় কী ভাবে থাকছেন, কত খরচ করছেন সে তথ্যও নেওয়া হবে।