—প্রতীকী ছবি।
একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাবের জন্য অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হল। শিক্ষা দফতর বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কের যাবতীয় তথ্য যত দ্রুত সম্ভব জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-এর মাধ্যমে পাঠাতে হবে।
অভিযোগ, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তাই কি ট্যাবের টাকা আগে দেওয়ার সিদ্ধান্ত? কারও মতে, দিতে হলে, এখনই ট্যাবের টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক। পরীক্ষার আগে ট্যাব দিলে অনলাইনে প্রস্তুতি কার্যত কিছুই হয় না। এখন থেকে ট্যাব পেলে প্রস্তুতি আরও ভাল হবে।
সাধারণত প্রতি বছর এই টাকা দ্বাদশের পড়ুয়াদের পুজোর ছুটির আগে বা পরে দেওয়া হচ্ছিল। দ্বাদশের পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কের তথ্য সেই সময়ই দেওয়ার কথা বলত শিক্ষা দফতর। এ বার দ্বাদশে ওঠার আগে জানুয়ারিতেই ব্যাঙ্কের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হল।
করোনায় উচ্চ মাধ্যমিকে প্রস্তুতিতে দ্বাদশের পড়ুয়াদের ট্যাবের জন্য তরুণের স্বপ্নের প্রকল্পে ওই টাকা অ্যাকাউন্টে দেওয়া শুরু হয়। তখন অনলাইন ক্লাসই ছিল প্রধান ভরসা। এখন সব ক্লাস অফলাইনে। তাই এখন ট্যাবের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠনের নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘অনেক সময়ে দেখেছি, ট্যাবের টাকা অ্যাকাউন্টে ঢোকার পরে টেস্টেই বসেনি পড়ুয়ারা। কিছু পড়ুয়া টেস্টে বসলেও উচ্চ মাধ্যমিক দেয়নি। এ বার পড়ুয়ারা দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার আগেই কেন টাকা দেওয়া হচ্ছে? এখন ট্যাব দিয়ে দিলে পড়াশোনায় আরও বেশি অমনোযোগী হওয়ার সম্ভবনা পড়ুয়াদের।’’
ইতিমধ্যেই দ্বাদশের কিছু পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা ভুলবশত অন্য অ্যাকাউন্টে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আর এক মাস বাকি। ফলে, এখনও ট্যাব না পেয়ে অনেকেই হতাশ। কী ভাবে টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে গেল, এর পিছনে সাইবার অপরাধের যোগ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে শিক্ষা মহলে।
কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ পড়ুয়ার নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং যে অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য দিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। বেলগাছিয়ার মনোহর অ্যাকাডেমির চার পরীক্ষার্থীর টাকা সল্টলেকের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অন্য গ্রাহকদের কাছে চলে গিয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ওই টাকা দিতে শিক্ষা দফতর নতুন উদ্যোগ শুরু করলেও জানি না কবে ওই টাকা তারা পাবে। দ্রুত টাকা পাঠানোর আবেদন করেছি।’’ তাঁর দাবি, ব্যাঙ্কের সব তথ্য নির্ভুল ভাবে ডিআইকে পাঠিয়েছিল পড়ুয়ারা। অন্য দিকে কলকাতার ডিআই অফিসের এক কর্তার দাবি, তাঁদেরও কোনও ভুল নেই।
ভোজবাজির মতো কিছু পড়ুয়ার ব্যাঙ্কের তথ্য পাল্টে গেল কী ভাবে? কলকাতা ডিআই অফিসের ওই কর্তার দাবি, ‘‘সাইবার জালিয়াতিতে তথ্য পাল্টাল কি না সেটাও দেখা দরকার। তথ্য আপলোড করার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষকে আরও সর্তক হতে হবে।’’