প্রতীকী ছবি
এক দিকে ঘূর্ণিঝড় আমপানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন তালিকা তৈরি এবং অন্য দিকে সেই তালিকা যাচাই করা তো আছেই। তার উপরে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না-হওয়া সত্ত্বেও সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়া অসাধু ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার ভার। এই তিন দায়িত্বের চাপে এমনিতেই ঘুম ছুটেছে জেলা প্রশাসনগুলির। বঞ্চিত প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে পাঠাতে হবে ২ জুলাইয়ের মধ্যে। এর পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার জন্যও চাপ বাড়ছে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের উপরে।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় শনিবার টুইটবার্তায় জানিয়ে দিয়েছেন, ত্রাণ বিতরণে দুর্নীতি রুখতে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। যাঁরা অন্যের প্রাপ্য ছিনিয়ে নিয়েছেন, শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে হবে তাঁদের বিরুদ্ধে।
ক্ষতিগ্রস্তদের ভুয়ো তালিকা যাঁরা তৈরি করেছেন বা যাঁরা অসৎ উপায়ে ত্রাণের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যে আইনত পদক্ষেপ করা সম্ভব, অনেক প্রশাসনিক কর্তাও সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে সরকারি সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত জেলা স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের তেমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট শিবিরের দাবি, জেলার ভিত্তিতে যে-সব টাস্ক ফোর্স তৈরি হয়েছে, তাদের অনুসন্ধান শেষ হওয়ার পরে আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি ভেবে দেখা হবে। শেষ পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হলে তা বলবৎ করবেন প্রধানত বিডিওরাই। তাঁরাই পঞ্চায়েতের প্রশাসনিক বিষয়গুলি দেখভাল করেন। ফলে ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নেওয়া ব্যক্তি বা ‘ভুয়ো’ তালিকা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে বিডিও অভিযোগ দায়ের করলে তবেই দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, টাস্ক ফোর্স ছাড়াও বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান এবং পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতার প্রতিনিধিকে নিয়ে আরও একটি কমিটি রয়েছে। পঞ্চায়েতে যে-সব অভিযোগ জমা পড়ছে, তা যাচাই করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে সেই কমিটি। তালিকা চূড়ান্ত
হলে তা জমা পড়বে বিডিওর কাছে। তিনি তা এসডিও এবং জেলাশাসকের মাধ্যমে প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরে পাঠিয়ে দেবেন। তার পরে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে রাজ্য।