রামনবমীর মিছিল ঘিরে তঠস্থ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। — ফাইল চিত্র।
গতবছর রামনবমীর শোভাযাত্রা ঘিরে আগুন জ্বলেছিল হাওড়ায়। এ বারেও হাওড়ার শিবপুরে রামনবমীর শোভাযাত্রা ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে। ১৭ এপ্রিল রামনবমীর দিন তাই এ বারের শোভাযাত্রার পথ বদল করল পুলিশ। পুলিশের সিদ্ধান্ত, জিটি রোড নয়, শোভাযাত্রা করতে হবে ফোরশোর রোড দিয়ে। এ দিকে পুলিশের সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ শোভাযাত্রার সংগঠক ‘অঞ্জনি পুত্র সেনা’ নামে বিজেপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। স্বভাবতই রামনবমীর মিছিল ঘিরে তঠস্থ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ। অঞ্জনি সেনা পুত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, গত দু’মাসে পুলিশকে দফায় দফায় চিঠি দিয়ে মিছিল করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে। পুলিশ কর্তারা বৈঠকে জানিয়েছেন, মিছিল ফোরশোর রোড দিয়ে করতে হবে। কিন্তু লিখিত ভাবে কোনও চিঠি দেওয়া বা ইমেল করা হয়নি। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সুরেন্দ্র বর্মা শুক্রবার বলেন, “২০১৫ সাল থেকে জিটি রোড দিয়েই কাজীপাড়া থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মিছিল করছি। এ বারও তা-ই করব। এ নিয়ে প্রয়োজনে হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হব আমরা।”
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “বৃহস্পতিবারই মিছিলের সংগঠকদের চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জিটি রোড দিয়ে মিছিল করতে দেওয়া যাবে না। এর পরে ওরা যদি আদালতে যান, আদালত যা নির্দেশ দেবে সেটাই করা হবে।”
গত দু’বছর পরপর রামনবমীর এই শোভাযাত্রা ঘিরে শিবপুরের জিটি রোডের পিএম বস্তির কাছে তুমুল সংঘর্ষ হয়। গত বছর ৩০ মার্চ হওয়া সংঘর্ষে প্রচুর বহিরাগত যুবক তরোয়াল, হকিস্টিক নিয়ে মোটরবাইকে করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় একাধিক গাড়ি, বাড়ি ও দোকানে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয় ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়। হাওড়া সিটি পুলিশ ৩৬ জনকে গ্রেফতার করে। উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র-সহ অন্যান্য ধারালো অস্ত্র। যদিও পুলিশের তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে আদালত এনআইএ-কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। তদন্তে নেমে আরও ১৬ জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি গত মাসে এই গোলমালের মূল চক্রান্তকারী হিসেবে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শামিম আহমেদ ওরফে বড়ে-সহ আরও ১১ জনকে গ্রেফতার করে এনআইএ।