মৃত ব্যক্তির নাম রয়েছে পুলিশর চার্জশিটে। প্রতীকী ছবি।
চাকরির প্রলোভনে পড়ে প্রতারণা চক্রের জালে জড়িয়ে কয়েক লক্ষ টাকা খোওয়া যায় লালগোলার সারপাখিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমানের। মৃত্যুর আগে তিনি একটি চিঠিতে লিখে গিয়েছিলেন, হতাশায় তিনি আত্মহননের পথ বেছে নেন। সেই ঘটনার তদন্তে দিবাকর কনুই নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তবে লালবাগ মহকুমা আদালতে সম্প্রতি জমা দেওয়া চার্জশিটে লালগোলা থানার পুলিশ আরও দাবি করেছে, মৃত আব্দুর রহমানও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন। আব্দুরের বাড়ির লোক তা শুনে হতবাক। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এমনটা হতে পারে না। বড় কোনও ভুল হচ্ছে।’’
এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সুরিন্দর সিংহ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে পুলিশের দাবি, চাকরি দেওয়ার নাম করে আব্দুর দু’জনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। তাই চার্জশিটে রেহেশান শেখ, প্রজ্ঞান সরকার ও দিবাকর কনুইয়ের সঙ্গে আব্দুরের নামও রয়েছে।
আব্দুরের আত্মহত্যার নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় তাঁর পরিবার। সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলার শুনানি হয়। আব্দুরের পারিবারের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আব্দুরের ন’পাতার চিঠিতে এসএসসি-তে চাকরি দেওয়ার নামে দুর্নীতি চক্রের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জনের নামের উল্লেখ থাকলেও পুলিশ একটা স্তরে গিয়ে তদন্ত শেষ করে। আসল অপরাধীদের আড়াল করতে সেখানে প্রতারিত প্রয়াত আব্দুরকেই অভিযুক্তের তালিকায় রাখা হয়েছে। বুধবার হাই কোর্টে পরবর্তী শুনানি।”
গত ২৭ সেপ্টেম্বর লালগোলা থানার পাইকপাড়া অঞ্চলের সারপাখিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুরের দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমে সাগরদিঘি থানার কাবিলপুরের বাসিন্দা রেহেশান শেখকে গ্রেফতার করে। ২০ অক্টোবর উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া থানার দক্ষিণ চাতরা এলাকার বাসিন্দা প্রজ্ঞান সরকারকে গ্রেফতার করে কলকাতার বাগদা এলাকা থেকে। ১৫ অক্টোবর তারাপীঠের এক হোটেল থেকে গ্রেফতার হয় ঘটনার মূল অভিযুক্ত কান্দির বাসিন্দা দিবাকর।