উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকদের জন্য আলাদা করে বেতনবৃদ্ধির ব্যবস্থা নেই। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে কর্মরত প্রধানশিক্ষকদের বেতনবৃদ্ধির কাঠামোয় ফিরে এল পুরনো নিয়ম। শিক্ষা দফতরের তরফে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুরনো নিয়ম ফেরানোর কথা জানানো হয়েছে। ২০১৯ সালে রোপা কার্যকর হওয়ার পর বলা হয় কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা যদি কোনও বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক পদে যোগ দেন তাহলে তিনি ‘ফিক্সেশনাল বেনিফিট’ বা স্থায়ী সুবিধা পাবেন। তার সঙ্গে অতিরিক্ত তিন শতাংশ হারে বর্ধিত বেতন পাবেন। কিন্তু ২০২২ সালের মে মাসে শিক্ষা দফতর একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায় প্রধানশিক্ষকেরা স্থায়ী সুবিধা পাবেন। কিন্তু তাঁরা অ্যাডিশনাল ইনক্রিমেন্ট বা অতিরিক্ত বেতনবৃদ্ধির সুযোগ পাবেন না। শিক্ষা দফতরের এমন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার তা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন প্রধানশিক্ষকদের একাংশ। বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু থেকে শুরু করে শীর্ষ আধিকারিকদের জানানো হয়েছিল।
কিন্তু এক বছর পর সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে আবার পুরনো নিয়ম চালু করার কথা ঘোষণা করেছে শিক্ষা দফতর। পুরনো নিয়ম অনুযায়ী, প্রধানশিক্ষকেরা এ বার অতিরিক্ত বেতনবৃদ্ধির সুযোগও পাবেন। শিক্ষা দফতরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অর্থ দফতরের অনুমোদন ক্রমে আবারও প্রধানশিক্ষকদের অতিরিক্ত বেতনবৃদ্ধির সুযোগ দেওয়া হবে। তা সত্ত্বেও শিক্ষক মহলের একাংশ এখনও খুশি নন। কারণ উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকদের জন্য আলাদা করে বেতনবৃদ্ধির ব্যবস্থা নেই। যদিও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের তুলনায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকদের কাজের চাপ অনেকটাই বেশি ।
সমালোচনার সুরে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল বলেছেন, “সরকার যখন অর্থ দফতরের দোহাই দিয়ে ইনক্রিমেন্ট তুলে নিল তখন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। মন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছিলাম। আজ সেই ইনক্রিমেন্ট ফিরিয়ে দেওয়া হল। এটা না করলে কোনও গুণী শিক্ষক, প্রধানশিক্ষক হতে চাইতেন না। আমরা আরও দাবি করছি, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষকদের হয় স্পেশাল পে বা অতিরিক্ত একটা ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হোক।” তবে এই সিদ্ধান্তকে সমালোচনার চোখে না দেখার পরামর্শ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের যে কথা বলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। গত বছর প্রধানশিক্ষকদের অ্যাডিশনাল ইনক্রিমেন্ট বা অতিরিক্ত বেতনবৃদ্ধির বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছিল। এ বার সেই স্থগিতাদেশ তুলে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলির তরফে এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা কখনওই কাম্য নয়।”