বাড়ির বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি রথীন ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় সাড়ে ১৯ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টোয় রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের উত্তর ২৪ পরগনার মাইকেলনগরের বাড়ি থেকে বেরোলেন ইডি আধিকারিকেরা। বেরোনোর সময় মন্ত্রীর অনুগামী তৃণমূল সমর্থকদের ভিড় ইডির উদ্দেশে ধিক্কার স্লোগান দিতে থাকে। আধিকারিকদের বার হতে অসুবিধা হচ্ছে দেখে রথীন নিজে এসে তাঁদের বাইরে বেরোতে সহযোগিতা করেন।
বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টোয় ইডির দল তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রথীন বলেন, “ইডি আধিকারিকেরা আমার সঙ্গে কোনও খারাপ ব্যবহার করেননি। তবে পুরসভায় নিয়োগ নিয়ে তাঁদের ধারণায় অনেক গন্ডগোল আছে।” তিনি নিজে একটি বই দিয়ে ইডির তদন্তে সহযোগিতা করেছেন বলে দাবি রথীনের। তিনি আরও বলেন, “সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই তল্লাশি। আমাকে হেনস্থা করতেই বাড়িতে এসেছিলেন ইডি আধিকারিকেরা।” নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও নথি তাঁর বাড়ি থেকে পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করেছেন খাদ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা নাগাদ রথীনের মাইকেলনগরের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বেআইনি ভাবে পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার তদন্তেই এই হানা। পাঁচটি গাড়িতে রথীনের বাড়িতে পৌঁছন ইডি আধিকারিকেরা। এর পর বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কয়েক জন ইডি আধিকারিককে মন্ত্রীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তাঁদের প্রশ্ন করা হয়, মন্ত্রী তদন্তে সহযোগিতা করছেন কি না। তার জবাবে এক ইডি আধিকারিককে ঘাড় নেড়ে বলতে শোনা যায়, ‘‘হ্যাঁ হ্যাঁ, মন্ত্রী সহযোগিতা করছেন তদন্তে।’’
দীর্ঘ দিন ধরে মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন রথীন। ইডি সূত্রে খবর, পুর নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজ়োনের অফিস থেকে বাজেয়াপ্ত করা বিভিন্ন নথিতে রথীনের নাম বার বার উঠে এসেছে। ইডির দাবি, ২০১৪-র পর থেকে পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। তার ভিত্তিতেই এই অভিযান। টাকা কাদের কাছে পৌঁছেছে, কীভাবে পৌঁছেছে, সেই খতিয়ে দেখাই তাদের উদ্দেশ্য। রথীনের বাড়ি ছাড়াও বৃহস্পতিবার মধ্যমগ্রাম পুরসভার দফতরে হানা দেন ইডির আধিকারিকেরা। এ ছাড়াও ১০ থেকে ১২টি দলে ভাগ হয়ে বরাহনগর, সল্টলেক-সহ মোট ১২টি জায়গায় তাদের তল্লাশি অভিযান চলেছে।