কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে উল্টে কোর্টে নিজেই তিরস্কৃত হলেন রাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক। কলকাতা হাই কোর্টের ধমক খেয়ে শেষমেশ মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। আইনজীবীদের একাংশের মতে, জনস্বার্থ মামলা অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ব্যক্তিগত স্বার্থে কিংবা আক্রোশ মেটাতে এই মামলাকে হাতিয়ার করা হয়। অতীতেও আদালত বহুবার এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই হুঁশিয়ারি অনেকের মন থেকেই মুছে গিয়েছে।
হাই কোর্টের খবর, রাজ্যের মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার অনুুপকুমার মুখোপাধ্যায় নিয়োগের গরমিল নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। সম্প্রতি সেইমামলা শুনানির জন্য উঠেছিল। মামলাটি শোনার পরেই প্রবল ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম। তিনি মামলাকারীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার ক্ষমতা থাকলে ইস্তফা দিয়ে লড়াই করুন। হয় আপনি এই মামলা প্রত্যাহার করবেন নয় তো এখান থেকে বাড়ি অথবা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সোজা জেলে যাবেন।’’ এর পরেই মামলা প্রত্যাহার করেন অনুপ। মামলা প্রত্যাহারের পরেই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ অবশ্য দাবি করেছেন যে এই জনস্বার্থ মামলার পিছনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের কলহ থাকতে পারে। অনুপ মামলা করলেও এই অন্তর্দ্বন্দ্বে দু’তরফেই আরও কুশীলব থাকতে পারে।
আইনজীবীদের একাংশ বলছেন, এমন কোনও ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থে জনস্বার্থ মামলা আগেও হয়েছে। ২০০৩ সালে কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অশোককুমার মাথুরও এমন জনস্বার্থ মামলা নিয়ে বলেছিলেন যে ব্যবসায়িক স্বার্থে বা ব্যক্তিস্বার্থে জনস্বার্থ মামলা করলে কড়া পদক্ষেপ করবেন। গত বছর দিল্লি হাই কোর্টেরও পর্যবেক্ষণ ছিল যে জনস্বার্থ মামলার ক্ষেত্রে আদৌ জনগণের স্বার্থ জড়িত নাকি ব্যক্তি স্বার্থ তা আদালতের ভাল ভাবে যাচাই করা উচিত।