রাজ্যে কোভিডের নতুন মুক্তাঞ্চল কি দার্জিলিং? গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন জেলায় করোনা আক্রান্তের গ্রাফ ওঠানামা করলেও দার্জিলিঙের চিত্র আলাদা। কোনও দিন সেঞ্চুরি তো কোনও দিন সেঞ্চুরির দোর গোড়ায়!
কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনায় করোনাকে আপাতত বেড়ি পড়ানো গেলেও দার্জিলিঙে কেন বেলাগাম? বাঙালির ভ্রমণ পিপাসা কি দার্জিলিঙের বিপদ ডাকছে, নাকি ভাইরাসের নিজস্ব ধর্মেই এই পাহাড়ি শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেশির দিকে?
রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা চিকিৎসক অজয় চক্রবর্তী এ বিষয়ে সাধারণ মানুষের করোনাবিধিকে গুরুত্ব দিয়ে পালন না করাকে অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন।
মাস্ক খুলে বেড়াতে যাওয়া ভাইরাসকে আমন্ত্রণ জানানোর সামিল বলেই মনে করছেন অজয়। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা বা উত্তর ২৪ পরগনায় বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আগেই। সে তুলনায় দার্জিলিঙে সংক্রমণের সংখ্যা ছিল কম। দার্জিলিঙে যেহেতু আগে এত মানুষ করোনা আক্রান্ত হননি, তাই নতুন জায়গায় ভাইরাস ছড়াচ্ছে বেশি।’’
শুক্রবার কলকাতায় ৭৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনায় ৯৪ জন এবং দার্জিলিঙে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৫ জন।
বুধ এবং বৃহস্পতিবার কলকাতায় যথাক্রমে ৮৫ এবং ৮৭ জন করোনা সংক্রমিত হন। এই দু’দিন দার্জিলিঙে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯৫ এবং ৮৮।
করোনার দাপট কিছু কমতেই কুলু, মানালি-সহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকদের ভিড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। জুলাই থেকে দার্জিলিঙে বাড়ছে পর্যটক। ফলে দার্জিলিং নিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাংলার চিকিৎসক মহল।
দার্জিলিঙে পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রাজ বসু বলেন, ‘‘পাহাড়ে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আমরা যথেষ্ট সতর্ক রয়েছি। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে জীবাণুমুক্তকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদেরও মাস্ক পরতে অনুরোধ করছি। পর্যটকরা টিকা নিয়েছেন কি না, তাও হোটেল বুকিং-এর সময় জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। দার্জিলিঙে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ না হলে তার আর্থিক প্রভাব পরবে স্থানীয়দের উপরই।’’
পর্যটনকেন্দ্রে বেশি ভিড় নিয়ে সতর্ক করছেন চিকিৎসক দীপেন্দ্র সরকার। পাহাড়ি এলাকায় জীবনকে বাঁচিয়ে জীবিকা চালানোর পরামর্শ তাঁর। দূর্গম এলাকায় সংক্রমণ বাড়লে পরিষেবা দেওয়া সহজ নয়। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য কুম্ভ মেলা থেকে ভোট পর্বকে কাঠগড়ায় তুলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় বাড়ানো করোনার তৃতীয় ঢেউকে আমন্ত্রণ জানানোর সমিল বলে মনে করছেন অনেকেই।