Wife kills Husband

মদের টাকা জোগাড় করতে মজুত রাখা ধান বিক্রির চেষ্টা, স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে লাঠির বাড়িতে স্বামীর মৃত্যু বাঁকুড়ায়!

পেশায় দিনমজুর ছিলেন বিকাশ মাল। তাঁর সামান্য আয়ে স্ত্রী এবং তিন সন্তানের পরিবার কোনও রকম চলত। কিন্তু মদের নেশা পেয়ে বসেছিল যুবককে। নেশার তাড়নায় বাড়ির আসবাবও বিক্রি করে দিতেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫২
Share:
Arrested Wife

স্বামীকে খুনের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার সুলেখা মাল। —নিজস্ব চিত্র।

মদের নেশার জন্য কখনও গৃহপালিত ছাগল বিক্রি করে দিয়েছেন। কখনও বাড়ির ঘটিবাটি বেচে দিয়েছেন। পরিবারে অশান্তি হয়েছে। কিন্তু স্বভাব বদলাতে পারেননি বাড়ির কর্তা। মদের টাকা জোগাড় করতে এ বার হাত দিয়েছিলেন মজুত রাখা ধানে। জানতে পেরে ছুটে যান যুবকের স্ত্রী। স্বামীকে হাতেনাতে ধরেন তিনি। রাগের চোটে লাঠিপেটা করেন স্বামীকে। তাতেই মৃত্যু হল ৩৮ বছরের বিকাশ মালের। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ওন্দা থানার কল্যাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের বিনোদনগর গ্রামে। স্বামীকে খুনে অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

পেশায় দিনমজুর ছিলেন বিকাশ। তাঁর সামান্য আয়ে স্ত্রী এবং তিন সন্তানের পরিবার কোনও রকম চলত। কিন্তু মদের নেশা পেয়ে বসেছিল যুবককে। নেশার তাড়নায় বাড়ির আসবাবও বিক্রি করে দিতেন তিনি। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছরে মদের প্রতি আসক্তি এমনই বেড়ে যায় যে, কাজকর্ম আর তেমন করতেন না বিকাশ। সংসারের হাল ধরতে হয় স্ত্রী সুলেখা মালকে। কিন্তু মত্ত স্বামীর জন্য সমস্যায় পড়ে পরিবার। অভিযোগ, কখনও ছাগল চরাতে যাওয়ার নাম করে পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎসকে বাজারে বিক্রি করে দিয়ে এসেছেন গৃহকর্তা, কখনও স্ত্রীর চোখ এড়িয়ে বাসনকোসন নামমাত্র দামে দিয়ে মদ কিনেছেন। শনিবার ঘরে মজুত রাখা ধান বিক্রির ফন্দি করেন বিকাশ। বিকেলে স্ত্রীর চোখ এড়িয়ে বস্তাবন্দি ধান নিয়ে বাড়ির বাইরে যান। ঠিক তখনই স্ত্রীর মুখোমুখি পড়ে যান যুবক। রাগে স্বামীর উপর চোটপাট করেন সুলেখা। অন্য দিকে, বিকাশও জানিয়ে দেন, ধান তিনি বিক্রি করবেনই। স্বামীকে আটকাতে বাড়িতে রাখা লাঠি হাতে তুলে নেন সুলেখা। বিকাশের মাথায় আঘাত করেন তিনি। লাঠির ঘায়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়েন বিকাশ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে ওন্দা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শনিবার রাতে বাড়িতে গিয়ে সুলেখাকে গ্রেফতার করে ওন্দা থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ (১) ধারায় (খুন) মামলা রুজু হয়েছে। রবিবার ওই মহিলাকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে হাজির করানো হলে তাঁকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ দর্জি বলেন, ‘‘মৃতের ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতের স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement