ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে নারদ মামলা ফের হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি। আইনজীবী মহলের ধারণা, বৃহস্পতিবারেই ওই বেঞ্চ কোনও রায় শোনাতে পারে।
গত সোমবার নারদ মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টের ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে। বুধবার ওই মামলার পুনরায় শুনানি হওয়ার কথা ছিল। পরে তা সম্ভব হয়নি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জন্য বুধ ও বৃহস্পতিবার আদালতের সমস্ত কার্যপ্রণালী বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কলকাতায় পড়েনি। কলকাতায় আপাতত দুর্যোগের আশঙ্কা নেই। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার আদালত ফের চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই মতো বকেয়া নারদ মামলার শুনানি ধার্য করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। সকাল ১১টায় কলকাতা হাই কোর্টের ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চেই ধৃত নেতা-মন্ত্রীদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। বৃহত্তর বেঞ্চে থাকবেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল, বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি সৌমেন সেন।
নারদ-কাণ্ডে ১৭ মে মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। ওই দিন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত অভিযুক্তদের জামিন দিলেও, কলকাতা হাই কোর্ট তাতে স্থগিতাদেশ জারি করে। ফলে হাজতবাস হয় ফিরহাদদের। ২১ মে হাই কোর্টের ভিডিশন বেঞ্চ ধৃতদের জেলবন্দির পরিবর্তে গৃহবন্দির নির্দেশ দেয়। এবং মামলাটি স্থানান্তরিত হয় ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে। ২৪ মে বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি হলেও কোনও রায় ঘোষণা হয়নি। তারই মধ্যে নারদ মামলা সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যায় সিবিআই। ২৫ মে শুনানিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে শীর্ষ আদালত। এবং আদালতের নির্দেশেই মামলাটি ফের কলকাতা হাই কোর্টে স্থানান্তরিত হয়। ফলে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের রায়ের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে উভয় পক্ষ।
আইনজীবীদের অনেকে মনে করছেন, ২৫ মে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে যা যা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সেই বিষয়গুলিকে সামনে রেখেই এগোবে। ওই দিন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা কোনও রায় না দিলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সিবিআই ও হাই কোর্টের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন। নিজাম প্যালেসে মমতার ধর্না এবং আইনমন্ত্রীর আদালতে যাওয়া প্রসঙ্গে বিচারপতিরা বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য যে কেউ সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিকে তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। অন্য দিকে, চার্জশিট জমা দেওয়ার পর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা এবং নিম্ন আদালতের জামিনের উপর স্থগিতাদেশ জারির জন্য সিবিআই ও হাই কোর্টের দিকে আঙুল তোলেন শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা। তাঁদের মতে, জামিনের বিরোধিতা করে ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে ধৃতদের। এমনকি তার জন্য বিশেষ বেঞ্চও তৈরি করেছে হাই কোর্ট।