শুক্রবার কালীঘাটে বীরভূমের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন। প্রতীকী ছবি।
সাগরদিঘিতে হার। তার পরে বগটুই হত্যাকাণ্ডের বর্ষপূর্তির দিন স্বজনহারাদের কয়েক জনের বিজেপির মঞ্চে গিয়ে জড়ো হওয়া। এই দুই ঘটনাকে এক সূত্রে বেঁধে দেখতে চাইছে জেলা তৃণমূল। দলের একাংশের বক্তব্য, দু’টি ক্ষেত্রেই সংখ্যালঘুদের শাসক দলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, বিষয়টি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বও চিন্তিত। দল সূত্রে বলা হচ্ছে, শুক্রবার কালীঘাটে বীরভূমের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন।
তৃণমূল সূত্রে দাবি, শুক্রবার কালীঘাটের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দলের নেতাদের কাছে জানতে চান, স্বজনহারাদের আর্থিক সাহায্য, সরকারি চাকরি দিলেও অনেককে বিজেপির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে কেন? আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন বাধার মুখে পড়তে হল, সেই ব্যাখ্যাও মুখ্যমন্ত্রী চান বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। বগটুই গ্রামে সংখ্যালঘুদের বিষয়টি দেখার জন্য রামপুরহাট-১ ব্লকের সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মির সঙ্গে তৃণমূলের তরফে দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখকে। তৃণমূল সূত্রে দাবি, সংখ্যালঘুদের এই ক্ষোভের আঁচ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে দলে। জিম্মি বলেন, ‘‘আমি ও কাজল দেখছি। দু-একটি পরিবারকে নিয়ে একটু সমস্যা রয়েছে। তবে পুরো গ্রাম আমাদের সঙ্গে রয়েছে।’’
বগটুই গ্রামে বিজেপির মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর পাশে স্বজনহারা যে দু’জনকে দেখা গিয়েছিল, সেই ফটিক শেখ ও মিহিলাল শেখ অবশ্য স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘যারা হামলা চালিয়েছিল, তাদের আশিসবাবুর আশেপাশেই দেখা যেত। সেই ক্ষোভেই আমরা বিজেপির সভায় গিয়েছি।’’ সেই ক্ষোভেই বগটুই গ্রামে আশিসকে বাধার মুখে পড়তে হয় বলেও তাঁদের দাবি। আশিস পাল্টা বলেন, ‘‘আজ যারা আমার বিরুদ্ধে বলছে, তারা শেখানো কথা বলছে। বগটুইয়ের মানুষ জানেন যে, আমি কেমন মানুষ।’’
তবে তৃণমূল চেষ্টা করলেও সংখ্যালঘুরা মুখ ফিরিয়েছেন বলে দাবি বিরোধীদের। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রতি সংখ্যালঘুদের যে আস্থা, সেটা আঘাত পেয়েছে।’’ কংগ্রেস সভাপতি মিল্টন রসিদের কটাক্ষ, ‘‘সংখ্যালঘুদের দায়িত্বে দিলেই সংখ্যালঘুদের ফের টানা যাবে, এমনটা নয়।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ‘‘আমরা মনে করেছি নিরাপরাধ আশ্রয়হীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তাই পাশে দাঁড়িয়েছি।’’