গ্রাফিক : শৌভিক দেবনাথ
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের পরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিল নাবালিকা। ‘প্রেমিকের’ বাড়িতে বিষয়টি জানাতে গেলে পেটে লাথি মারে তার দাদা— অভিযোগ বছর ষোলোর মেয়েটির। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মৃত সন্তানের জন্ম দেয় প্রায় ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকাটি। শনিবার রাতে হাসপাতাল থেকে সন্তানের দেহ পলিব্যাগে মুড়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছে মেয়েটি।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) সোনাওয়ানে কুলদীপ সুরেশ জানান, অভিযুক্ত ‘প্রেমিক’ রাজীব বাউড়ি ও তার দাদা বিপুল বাউড়িকে সে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজীবের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করে প্রতারণা এবং বিপুলের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বাকে মারধরের অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে। নাবালিকার স্বাস্থ্যের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানান।
মেয়েটি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে, কয়েক মাস আগে বছর উনিশের রাজীবের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। কিছু দিন আগে দু’জনের সম্পর্ক ভেঙে যায়। এর পরেই সে বুঝতে পারে, অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। নাবালিকার দাবি, কয়েক দিন ধরে সে বিয়ের কথা বললেও রাজীব রাজি হয়নি। শনিবার বিকেলে রাজীবের বাড়িতে হাজির হয় সে। নাবালিকার অভিযোগ, “আমাকে ওদের বাড়ির কেউ মানতে চায়নি। পুলিশের কাছে যাওয়ার কথা বলতেই রাজীবের দাদা বিপুল আমার পেটে লাথি মারে। খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি।’’ সে জানায়, পড়শিরা তাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে মৃত সন্তান প্রসব হয়। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মেয়েটির শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। পশ্চিম বর্ধমানের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) চেয়ারপার্সন রীতা বসুচৌধুরী বলেন, “পুলিশ ঘটনাটি আমাদের জানিয়েছে। গুরুত্ব দিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মেয়েটি যাতে ক্ষতিপূরণ পায় এবং কোনও সমস্যায় না পড়ে, তা দেখা হবে।’’
রবিবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে তাদের তিন দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের বাড়ির এক সদস্যের দাবি, ‘‘দু’জনকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।”