মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল মেডিক্যাল বোর্ড। সোমবার সন্ধ্যায় তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল রেশন বণ্টন দুর্নীতিতে গ্রেফতার রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আচমকা অসুস্থ হওয়ার পর সেখানে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। রবিবারের মধ্যে তাঁর নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও শেষ হয়। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট থেকে প্রাইভেট কেবিনে নিয়ে আসা হয়েছিল মন্ত্রীকে। রবিবার রাতেই সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। এর পরই সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর দেখভালের দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল বোর্ড।
মন্ত্রীকে কবে ছুটি দেওয়া হবে তা স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট। হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেই ইডি হেফাজত শুরু হবে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের। রেশন দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ১০ দিনের ইডি হেফজতে পাঠিয়েছে আদালত। তবে সেই নির্দেশ দেওয়ার আগেই মন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছিল, মন্ত্রীর চিকিৎসা করানোর পর তিনি সুস্থ হলে তবেই তাঁকে হেফাজতে নিতে পারবে ইডি। সোমবার মেডিক্যাল বোর্ড তাদের সিদ্ধান্ত জানানোর পর ধরে নেওয়া হচ্ছে, মন্ত্রী এখন সুস্থ। তাই তাঁর ইডি হেফাজতে যেতেও বাধা নেই।
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে। পরের দিন, অর্থাৎ শুক্রবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হলে তিনি শুনানি চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন। আদালতের নির্দেশেই তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর পছন্দের বেসরকারি হাসপাতালে। ওই দিন রাতেই বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার বিভাগে ভর্তি নেওয়া হয় মন্ত্রীকে। হাসপাতাল তখন জানিয়েছিল, সুগারের রোগী জ্যোতিপ্রিয়ের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য শারীরিক জটিলতাও। যার পরীক্ষা হওয়া দরকার। রাখা দরকার পর্যবেক্ষণে। এর পরেই শনি এবং রবিবার মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার হল্টার মনিটরিং করা হয়। সঙ্গে হয় এমআরআই। আসে রিপোর্টও।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় , মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার হল্টার মনিটরিংয়ে যা তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। এমআরআই রিপোর্টে কিছু পাওয়া গিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু না জানালেও, রবিবার রিপোর্ট পাওয়ার পর রাতেই মন্ত্রীকে সঙ্কট জনক রোগের চিকিৎসা বিভাগ থেকে সরিয়ে এনে ব্যক্তিগত ঘরে সাধারণ শয্যায় নিয়ে আসা হয়। তখনই অনুমান করা গিয়েছিল, এমআরআই রিপোর্টেও গুরুতর চিন্তার বিষয় কিছু নেই। এর পরে সন্ধ্যায় মেডিক্যাল বোর্ড জানিয়ে দেয় মন্ত্রীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার কথা।