Raj Bhawan issues Circular for the VC of Universities

আচার্যের পর উপাচার্যই সব, সরকারকে মানতে বাধ্য নয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি, রাজ্যপালের নির্দেশে বিতর্ক

রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যের রাজ্যপালের দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উদ্দেশে। তাতে বলা হয়েছে, আচার্যের পর উপাচার্যই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রধান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:২৯
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণকে কার্যত ‘শূন্য’-এ নামিয়ে আনল রাজভবন। রাজভবন থেকে প্রকাশিত সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তিটি দেখার পর অন্তত তেমনই অভিমত শিক্ষা জগতের অনেকের। শনিবার রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য তথা রাজ্যে রাজ্যপালের দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উদ্দেশে। তাতে বলা হয়েছে, আচার্যের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সার্বভৌম অধিকর্তা হলেন উপাচার্যই। তাঁর অধীনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা তাঁরই নির্দেশ মেনে কাজ করবেন। সরকার তাঁদের নির্দেশ দিতেই পারে। কিন্তু সেই নির্দেশ তাঁরা মানতে বাধ্য নন।

Advertisement

শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, রাজভবন থেকে ওই বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের সমস্ত সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের কাছে। কেন এই বিজ্ঞপ্তি, তার ব্যাখ্যাও প্রথমেই দিয়ে দিয়েছে রাজভবন। জানানো হয়েছে, উপাচার্যদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে কিছু সমস্যার সমাধান চেয়েছিলেন উপাচার্যরা। তাঁদের বলা সেই সব সমস্যা নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করেই কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমেই বলা হয়েছে উপাচার্যের ক্ষমতার কথা। রাজভবন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, সহ উপাচার্য এবং অন্যান্য কর্তাদের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তাঁরা সরকারের নির্দেশ মানতে বাধ্য নন। সেই নির্দেশ কার্যকর করারও কোনও দায়বদ্ধতা নেই তাদের। সরকারি নির্দেশে একমাত্র উপাচার্য অনুমোদন দিলেই তা মান্যতা পাবে। অর্থাৎ রাজভবনের তরফে ঘুরিয়ে বলা হল, রাজ্যের শিক্ষা দফতরের যে কোনও নির্দেশ উপাচার্যের মান্যতা পেলে তবেই কার্যকর হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। না হলে নয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে এ কথাও জানানো হয়েছে যে, উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল হর্তাকর্তা। আর উপাচার্য যে হেতু শিক্ষাগত প্রধান, তাই বাকিরা তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করে চলবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তাঁর নির্দেশই পালন করবেন।

Advertisement

এ ছাড়াও আরও একটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে গিয়ে সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা নিয়ামক এবং ফিনান্স অফিসারকেও নিয়ে যাওয়া হয় ঝাড়গ্রামের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর পরেই শনিবার রাজভবন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, এই নির্দেশ রাজ্য দিতে পারে না। উচ্চশিক্ষা সচিব এই কাজ করতে পারেন না।

নয়া বিজ্ঞপ্তিতে রাজভবনের বক্তব্য, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার যাচ্ছেন, যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাচ্ছেন এবং যিনি রেজিস্ট্রার, তাঁদের মধ্যে আলোচনা করেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

উল্লেখ্য, রাজ্যে এখন কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের একক সিদ্ধান্তে মনোনীত উপাচার্যেরা রয়েছেন। বাকি ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নিজেই উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement