ফাইল চিত্র
বিশ্ব উষ্ণায়ন রুখতে সুন্দরবনে সাড়ে ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ রোপণের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার সেই নির্দেশ কার্যকর করতে ৮০টি ম্যানগ্রোভ কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর। ইয়াস ঘুর্ণিঝড়ের পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রাকৃতিক দুর্যোগ রুখতে 'প্রকৃতি রক্ষক’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছেন। সমুদ্র উপকুলবর্তী এলাকা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৪ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। সেই বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনেই কালো বাইন, পেয়ারা বাইন, কাঁকড়া বকুল,কাঁকড়া গর্জন, হরগোজা, খালসি ধানী, খালসি টক ক্যাওড়া প্রভৃতি জাতের ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যার ফলস্বরূপ, দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মিলিয়ে ৮০টি ম্যানগ্রোভ কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ৪০টি, উত্তর ২৪ পরগনায় ২০টি এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ২০টি কেন্দ্র তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিজ উদ্যোগেই ম্যানগ্রোভ কেন্দ্র তৈরি করছি। ম্যানগ্রোভ কেন্দ্র তৈরি হয়ে গেলে আর আমাদের ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ জোগাড় করতে হবে না। তাতে সুন্দরবনকে বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে বাঁচাতে সুবিধাই হবে।’’
ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, আমডাঙা, বাদুড়িয়া, হাসনাবাদ, মিনাখাঁ প্রভৃতি এলাকায় ১ কোটি ২২ লক্ষ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাসন্তী, ক্যানিং, কুলতলি, সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ এলাকায় ১২ কোটি ৬৮ লক্ষ এবং পূর্ব মেদিনীপুরে্র খেজুরি, নন্দীগ্রাম, রামনগর, কাঁথি প্রভৃতি এলাকায় ১ কোটি ৬১ লক্ষ ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে বন দফতর সূত্রে। ইতিমধ্যে কয়েক কোটি ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। এত দিন বন দফতরের নিজের ম্যানগ্রোভ কেন্দ্র না থাকায় তা নানা জায়গা থেকে গাছ জোগাড় করতে হচ্ছিল। কিন্তু নিজেদের ম্যানগ্রোভ কেন্দ্র তৈরি হয়ে গেলে, আর বাইরে থেকে গাছ জোগাড় করতে হবে না বন দফতরকে। এই কাজে হাত লাগিয়েছে পঞ্চায়েত দফতরও। পঞ্চায়েত মারফত ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা ম্যানগ্রোভ গাছ লাগিয়ে ২২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৮৮৬টি শ্রমদিবস সৃষ্টি করেছেন বলে জানানো হয়েছে। এর ২২২০টি বৃক্ষরোপণ প্রকল্প তৈরি হয়েছে। এর ফলে ৬৪ কোটি টাকা পঞ্চায়েত দফতর থেকে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫ কোটি ৫১ লক্ষ ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ লাগানো হচ্ছে বলেই সরকারি সূত্রে খবর।