—প্রতীকী চিত্র।
ভুয়ো নামে ধান বিক্রির চক্র আটকাতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে খাদ্য দফতর। এই চক্র কাজ করার ফলে সরকার তো বটেই, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গ্রামের প্রান্তিক কৃষকসমাজ। তাই এ ধরনের অসাধু চক্রকে কড়া হাতে দমন করতে চায় রাজ্য সরকার। খাদ্য দফতরের নিয়মানুযায়ী, একজন চাষি খরিফ মরশুমে সর্বোচ্চ ৪৫ কুইন্টাল ধান সরকারের কাছে নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারেন। সম্প্রতি খাদ্য দফতর জেনেছে, বেশ কিছু অ্যাকাউন্টে ৪৫ কুইন্টালের অনেক বেশি ধান বিক্রির টাকা জমা পড়েছে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ওই ধরনের অ্যাকাউন্টগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সব অ্যাকাউন্টে লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে। কৃষকদের নাম করে ধান বিক্রি করার বিশেষ চক্র বহু দিন ধরে সক্রিয় রয়েছে। এই অসাধু চক্র বন্ধ করতেই কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে খাদ্য দফতর।
দফতর সূত্রে খবর, যাঁদের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা কেউই এখনও পর্যন্ত প্রাপ্য টাকার জন্য দাবি জানাননি। আর তাতেই খাদ্য দফতর নিশ্চিত যে, বেআইনি উপায়ে ধান বিক্রি থেকে আয়ের সুযোগ নেওয়া অসাধু কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সফল হয়েছেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রকৃত চাষি নিয়ম মেনে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করে থাকলে তাঁকে অবশ্যই টাকা দেওয়া হবে। তবে অন্যায় উপায়ে কেউ সরকারকে ভুল বুঝিয়ে অসৎ উপায়ে আয় করতে চাইলে তা বরদাস্ত করা হবে না।
দফতরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে ভুয়ো নামে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে ধান বিক্রির বিষয়ে বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টের টাকা আটকে রাখা হয়েছে। ওই টাকা যাতে ফেরত নেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়াও শুরু করেছে খাদ্য দফতর। তবে কোনও কৃষক যদি নির্দিষ্ট নথিপত্র প্রমাণ-সহ জমা দিয়ে নিজের পাওনার দাবি জানান, তাহলে তাঁকে ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
সূত্রের খবর, গোটা রাজ্যে ১৩০০ কোটি টাকার অবাঞ্ছিত লেনদেন আটকানো গিয়েছে। খরিফ মরশুমে নথিভুক্ত চাষিদের অ্যাকাউন্ট পরিবর্তনের যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়ার সুযোগ নিয়ে ভুয়ো নামে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সরকারকে ধান বিক্রি করা হয়েছে। তবে, কোনও চাষি যদি সেই টাকা দাবি করেন, তাহলে তাঁকে পর্যাপ্ত প্রমাণ দাখিল করতে হবে। তিনি যে প্রকৃত চাষি এবং নির্ধারিত সীমার মধ্যেই ধান বিক্রি করেছেন, সেই প্রমাণও দিতে হবে তাঁকে। তবেই তিনি ধান বিক্রির প্রাপ্য টাকা পাবেন। প্রমাণ হিসেবে দিতে হবে আধার কার্ড, জমির নথি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য।