সরকারি উদ্যোগে কেনা ধানের একাংশ রাইস মিল থেকে খোলাবাজারে বেচে দেওয়ার অভিযোগ দফতরে এসেছে। ধান বিক্রি করে সেই জায়গায় বাইরে থেকে কেনা নিম্নমানের চাল সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয়। এজন্য ভিন রাজ্য থেকে চাল আনা হয়। এর ফলে রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের কাছে নিম্নমানের চাল পৌঁছনোর আশঙ্কা থাকে।
সরকারি উদ্যোগে ধান কেনায় কড়া নজরদারি খাদ্য দফতরের। প্রতীকী ছবি
সরকারি উদ্যোগে কেনা ধানের উপর বিশেষ নজরদারি চালানো শুরু করল খাদ্যদফতর। সরকারি উদ্যোগে ধান কেনার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে নেওয়া হল বিভিন্ন ব্যবস্থা। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত প্রায় ৩০ লক্ষ টন ধান সরকারি উদ্যোগে চাষিদের থেকে কেনা হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যানবলছে,চাল তৈরির জন্যইতিমধ্যে ২৬ লক্ষ টন ধান ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাইস মিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ধান ভানিয়ে চাল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন জেলায় খাদ্যদফতরের কাছে নথিভুক্ত রাইস মিল আছে। সূত্রের খবর, সেই রাইস মিলগুলিতেই পাঠানো হচ্ছে খাদ্যদফতরের বিশেষ নজরদারির দল। যেসমস্ত রাইস মিল অনেক পরিমাণে ধান নিয়েছে সেখানেই বেশিকরে নজরদারি চালানো হচ্ছে। হিসেব অনুযায়ী ধান মজুত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থায়ী ক্রয় কেন্দ্র ও অস্থায়ী শিবির থেকে ধান সরাসরি সংশ্লিষ্ট রাইস মিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কোন রাইস মিলে কত পরিমাণে ধান পাঠানো হয়েছে,তার থেকে কত পরিমাণ চাল দেওয়া হচ্ছে,তার তালিকা খাদ্যদফতরের কাছেই থাকে। সেই তালিকা থেকে দেখা যাচ্ছে, বেশকিছু রাইস মিল ইতিমধ্যে ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টন চাল পেয়েছে। অনেকগুলি মিল প্রধান ধান উৎপাদক জেলায় অবস্থিত নয়। যে পরিমাণ ধান ওইসব রাইস মিলে গিয়েছে তা ঠিকঠাক সেখান আছে কিনাসেই হিসেব মিলিয়ে দেখছেখাদ্যদফতরের বিশেষ নজরদারি দল।
রাইস মিল কী পরিমাণ ধান নিয়েছে,তার থেকে কতটা চাল সরকারকে দেওয়া হয়েছে,সেই হিসেব দেখে মজুতের পরিমাণ পর্যালোচনা করছে দলটি। নজরদারির কারণ প্রসঙ্গে খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নজরদারির মূল লক্ষ্য এক শ্রেণির রাইস মিলের বেআইনি কারবার আটকানো। সরকারি উদ্যোগে কেনা ধানের একাংশ রাইস মিল থেকে খোলাবাজারে বেচে দেওয়ার অভিযোগ দফতরে এসেছে। ধান বিক্রি করে সেই জায়গায় বাইরে থেকে কেনা নিম্নমানের চাল সরকারকে দিয়ে দেওয়া হয়। এজন্য ভিন রাজ্য থেকে চাল আনা হয়। এর ফলে রাজ্যের রেশন গ্রাহকদের কাছে নিম্নমানের চাল পৌঁছনোর আশঙ্কা থাকে।
সেই অসাধু কারবার ঠেকাতেই এ বার প্রথম থেকেই কড়া ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে খাদ্যদফতর। নজরদারি দল রাইস মিলে গিয়ে নথিপত্র দেখার পাশাপাশি ধানের মজুত ভান্ডার পরীক্ষা করছে। ধানের মজুত ভান্ডারের ছবি তোলা হচ্ছে। জেলা থেকেই যাবতীয় তথ্য ছবি-সহ রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে কলকাতার খাদ্যশ্রী ভবনে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই দফতর পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে।