প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত ৬৮ লক্ষের বেশি ভুয়ো রেশন কার্ড ধরা পড়েছে। এত দিন এই সব ভুয়ো রেশন কার্ড কাজে লাগানোর ফলে ভর্তুকিতে দেওয়া চাল-গম বেহাত হয়ে যাচ্ছিল। এখন সেই সব রেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাতিল হয়ে যাওয়া ভুয়ো রেশন কার্ডের সংখ্যার নিরিখে দেশে উত্তরপ্রদেশের পরেই পশ্চিমবঙ্গ।
রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযোগ করে, আধারের মাধ্যমে রেশন কার্ড যাচাই করার কাজ শুরু করতেই পশ্চিমবঙ্গের মতো বিভিন্ন রাজ্যে লক্ষ লক্ষ ডিজিটাল রেশন কার্ড সন্দেহজনক তালিকায় চলে আসে। দেখা যায়, একই আধার নম্বরে একাধিক রেশন কার্ড রয়েছে। কোথাও আবার একই পরিবারের কোনও এক জনের নামে একাধিক কার্ডেরও খোঁজ মিলেছে। অনেক রেশন কার্ডধারী উপভোক্তা মারা গেলেও তাঁর তথ্য প্রশাসনকে জানানো হয়নি। ফলে মৃত ব্যক্তিদের নামেও রেশন তোলা হচ্ছিল। সে সবও বাতিল হয়েছে।
খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ থেকে এই কাজ শুরুর পরে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত গোটা দেশে ৪ কোটি ৭৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ২৩০টি ভুয়ো রেশন কার্ড ধরা পড়েছে। সেগুলি বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ কোটি ৭৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৩৮০টি রেশন কার্ড উত্তরপ্রদেশের। পশ্চিমবঙ্গের ৬৮ লক্ষ ৬২ হাজার ৩৭১টি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। তার পরে রয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলি।
রেশন কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে দেশের প্রায় ৮০ কোটি পরিবারকে সস্তায় খাদ্যশস্য দেওয়া হয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রায় পৌনে পাঁচ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল হওয়ায় সরকারের বছরে প্রায় ৩৩,৬০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযোগের কাজও প্রায় ৯৯ শতাংশ শেষ। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তারা অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিত করে বাতিল করার কাজটি রাজ্য সরকারের স্তরেই হয়। রাজ্য প্রশাসনই সন্দেহজনক রেশন কার্ড চিহ্নিত করে। প্রয়োজনে রেশন কার্ডে দেওয়া ঠিকানায় গিয়ে যাচাই করা হয়। ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করে যে সব গরিব মানুষ রেশন পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের নাম যোগ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রথমে আপত্তি করলেও পরে ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ ব্যবস্থায় নাম লিখিয়েছে। তার জন্য রেশন কার্ড-আধার সংযোগ চালু হতেই সহজে ভুয়ো রেশন কার্ডের সন্ধান মিলতে শুরু করেছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।