—প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারদের নিয়ে বুধবার অর্থ দফতরের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের বেতন ট্রেজ়ারির মাধ্যমেই হওয়া নিয়ে আলোচনা হল। অর্থ দফতরের প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, এর অর্থ স্বাধিকার হরণ নয়। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আলোচনা করে তাদের মতামত জানাক। মতামতের ভিত্তিতে এগোনো হবে। প্রত্যেকে যাতে সহজে অনলাইনে নিজের প্রভিডেন্ট ফান্ডের তথ্য জানতে পারেন, তেমন ব্যবস্থা চালু করার প্রসঙ্গও এ দিন ওঠে। এই বিষয়টি বাস্তবায়িত হলে বিতর্কিত ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর মাধ্যমেই তা হবে বলে খবর।
এর আগে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসারদের বুধবার নবান্নে অর্থ দফতরের সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত থাকার কথা জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এইচআরএমএস বা ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর বিষয়ে আলোচনা হবে। এই ১১ বিশ্ববিদ্যালয় হল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়। তবে রাজ্যের এই উদ্যোগকে জুটা, কুটা-সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ বলেই মনে করছে। তাদের আশঙ্কা, এইচআরএমএস চালু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে আর বেতন দেওয়ার অধিকার থাকবে না। এ ক্ষেত্রে বেতন নিয়ে কোনও রকম অনিয়ম হলে তা বলার জায়গাও থাকবে না। তবে সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে জানানো হয়, স্বাধিকার হরণের কোনও উদ্দেশ্য রাজ্যের নেই। পদ্ধতিগুলিকে সহজ করার জন্যই এমন উদ্যোগ। সূত্রের খবর, আধিকারিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরো বিষয়টি নির্ভর করবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মতামতের ওপরে। প্রথমে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ডাকা হয়েছে। এর পরে ভাগে ভাগে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও ডাকা হবে। সূত্রের খবর, বছর দেড়েক আগে প্রভিডেন্ট ফান্ড নিয়ে একটি মডিউল তৈরি করা হবে বলে রাজ্যের তরফে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে এর মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না, কারণ যাদবপুরের আইন অনুযায়ী আলাদা প্রভিডেন্ট ফান্ড ট্রাস্ট আছে ।
এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ১১ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছিল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত দাস এ দিন বলেন, ‘‘পরামর্শই হোক অথবা সিদ্ধান্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়, সরকারের এমন কোনও সিদ্ধান্তকে আমরা সমর্থন করি না। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকারের এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘বাঁচানোর’ উদ্যোগ কেন? এতে তো সরকারের আসল উদ্দেশ্য নিয়েই সন্দেহ জাগছে।" তাঁর বক্তব্য, বিকাশ ভবন বা রাজভবন— কারওই এই ধরনের খবরদারি মানসিকতা কাঙ্ক্ষিত নয়। এ দিকে সূত্রের খবর, ট্রেজ়ারির মাধ্যমে বেতন দেওয়া শুরু হলে শিক্ষক সমিতিগুলি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে।