Kolkata Book fair

Kolkata Book Fair: ওমিক্রন-উদ্বেগে কি অনিশ্চিত বইমেলা, গিল্ডকর্তার দাবি, তাঁরা মেলা করতে তৈরি

করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২১ সালে বইমেলা হতে পারেনি। ফলে শেষ আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা হয়েছিল ২০২০ সালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৩:৫৫
Share:

কলকাতা বইমেলায় মানুষের ঢল। ফাইল ছবি।

গত কয়েকদিনে করোনা সংক্রমণ যে ভাবে হু-হু করে বাড়ছে, তাতে বহু পরিকল্পিত কর্মসূচিই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কিন্তু এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ এবং চিন্তা সম্ভবত দেখা দিয়েছে কলকাতা বইমেলা নিয়ে। করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২১ সালে বইমেলা হতে পারেনি। ফলে শেষ আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা হয়েছিল ২০২০ সালে।

Advertisement

করোনার প্রকোপ কমে আসার পর এবং অধিকাংশ নাগরিকের জোড়া টিকা হয়ে যাওয়ার পর ২০২২ সালের বইমেলা হবে বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। মেলার সময়সীমা ঠিক হয়েছিল ৩১ জানুয়ারি থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে এবং স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, তৃতীয় ঢেউ প্রায় চলেই এসেছে, তাতে গোটা পরিস্থিতিটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

করোনা-বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি ঢেউ এলে তা বিদায় নিতে অন্তত ছ’সপ্তাহ সময় নেয়। ফলে তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়ে থাকলে (বা অল্প কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে ধরে নিলে) তা মধ্য-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকার সম্ভাবনা। ঠিক যে সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা কলকাতা বইমেলা। বস্তুত, কলকাতা বইমেলা হবে ধরে নিয়েই এবার জেলার বইমেলাগুলি হয়েছে। সেই সময়েই ঠিক হয়েছিল, জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলা বইমেলা হবে না। কারণ, জেলার প্রকাশকরা কলকাতা বইমেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত থাকবেন।

Advertisement

গত বছর বইমেলা না হওয়ায় সমস্ত প্রকাশকেরাই ২০২২ সালের কলকাতা বইমেলার দিকে তাকিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে করোনা-আতঙ্ক নতুন করে ছড়িয়ে পড়ায় বইপাড়ায় এবং প্রকাশকদের মধ্যে উদ্বেগ এবং শঙ্কা তৈরি হয়েছে। শঙ্কা— ওমিক্রন এবং করোনার দাপটে এ বছরও না বইমেলা বন্ধ হয়ে যায়!

বইমেলার উদ্যোক্তা গিল্ডের কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, তাঁরা সমস্ত প্রস্তুতি অব্যাহত রেখেছেন। ত্রিদিবের কথায়, ‘‘আমরা আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। স্টল বুকি, টেবিল বুকিং প্রায় শেষ। এ বারের থিম অনুযায়ী বাংলাদেশের বিভিন্ন তোরণ বা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও চলছে। আমরা আমাদের পরিকল্পনা মতোই এগোচ্ছি।’’

তা হলে কি বইমেলা হচ্ছে? ত্রিদিব বলছেন, ‘‘পরিস্থিতি অনুযায়ী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সরকার যদি মনে করে মেলা হবে, তা হলে হবে। সরকার যদি মনে করে মেলা হবে না, তা হলে হবে না। দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যা চাইবেন, সেটাই হবে। আমাদের উনি যে ভাবে এগোতে বলবেন, সে ভাবেই এগোব। তবে এখনও পর্যন্ত আমরা আমাদের প্রস্তুতিতে কোনও রকম ঢিলে দিচ্ছি না।’’ গিল্ডের এই কর্তা আরও জানিয়েছেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বরেও তাঁরা রাজ্যের মুখ্যসচিব-সহ অন্যান্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে মেলার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। তখন অবশ্য করোনার সংক্রমণের এই বাড়বাড়ন্ত ছিল না। পরিবর্তির পরিস্থিতিতে সবটাই নতুন করে ভাবতে হতে পারে।

প্রসঙ্গত, মমতা বৃহস্পতিবারেই জানিয়েছেন, তিনি নিরন্তর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। সেই অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঘটনাচক্রে, আগামী ৩ জানুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে একটি পড়ুয়া সমাবেশ রয়েছে। সেখানে সারা রাজ্য থেকে অন্তত ছ’হাজার পড়ুয়ার মিলিত হওয়ার কথা ছিল। পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে সেই সংখ্যা প্রথমে কমিয়ে তিন হাজার এবং তার পরেও কমিয়ে আড়াই হাজার করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের সময় ছিল ৪ ঘণ্টা। তা কমিয়ে আনা হচ্ছে ১ ঘণ্টায়।

যা থেকে স্পষ্ট যে, ফলে করোনা সংক্রমণের কারণে বিবিধ বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা শুরু হয়ে গিয়েছে। এখন দেখার, কলকাতা বইমেলা তার আওতায় পড়ে কি না। পড়লেও, কী ভাবে পড়ে। মেলা একেবারে বাতিল হয়ে যাবে নাকি মেলার বহর কমিয়ে ছোট আকারে তা করা হবে, তা-ও দেখার। তবে যতক্ষণ না নবান্ন কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, ততক্ষণ কলকাতা বইমেলা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা যে থেকে যাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement