শহরে কাফিল খান। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার জুনিয়র ডাক্তারদের দাবির সঙ্গে সহমত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তবে রবিবার কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রশ্নের জবাবে বললেন কাফিল খান বললেন, হাসপাতালে কখনওই জরুরি পরিষেবা বন্ধ হওয়া উচিত নয়।’’
দু’বছর আগে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ৭০টি শিশুর মৃত্যু হয়। প্রায় অসাধ্য সাধন করে অক্সিজেন আনিয়ে অন্য শিশুদের বাঁচান কাফিল। পরিণামে তাঁকেই যোগী আদিত্যনাথ সরকারের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসা সেই ডাক্তার তথা সমাজকর্মী কাফিল খান কলকাতায় কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন।
যোগেশ মাইম অ্যাকাডেমির সভাঘরে দু’বছর আগের ঘটনা প্রসঙ্গে কাফিল বলেন, ‘‘সে-দিন হাসপাতালে ঢোকামাত্রই কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই! একটি মৃত শিশুর বাবা আমার কলার চেপে ধরেন।’’ তার পরেই কলকাতার ডাক্তার-নিগ্রহ প্রসঙ্গে চলে যান তিনি। জানান, চিকিৎসক-নিগ্রহ তিনি আদৌ সমর্থন করেন না। এনআরএস-কাণ্ডের জেরে যে-ভাবে সাত দিন ধরে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছিল, তা-ও উচিত হয়নি।
২০১৭ সালের অগস্টে অক্সিজেনের অভাবে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭০টি শিশুর মৃত্যু হয়। কাফিল এ দিন জানান, হাসপাতালের অন্য জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় অক্সিজেন জোগাড় করতে নেমে পড়েছিলেন তিনি। তার পরে তিনি ও তাঁর পরিবার কী ভাবে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের রোষে পড়েছিলেন, এত দিনে তা সকলেরই জানা। জেল, সরকারি চাকরি থেকে সাসপেনশন, ভাইকে দুষ্কৃতীদের গুলি— কিছুই বাদ থাকেনি।
‘পিপলস ফিল্ম কালেক্টিভ’ সংস্থার ডাকে কলকাতার অনুষ্ঠানের ফাঁকে কাফিল জানান, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের বিক্ষোভ চলাকালীন ফোনে কয়েক জন আন্দোলনকারীর সঙ্গে কথা বলে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তবে তিনি মনে করেন, রোগীদের বিক্ষোভের সময় ডাক্তারদের বোঝানোর চেষ্টা করা উচিত। অনেক সময়েই ডাক্তারেরা কথাই বলতে চান না! প্রশ্ন ওঠে, এনআরএস-কাণ্ডে চিকিৎসকদের সর্বভারতীয় সংগঠন আইএমএ ডাক্তারদের আন্দোলন সমর্থন করলেও কাফিলের পাশে দাঁড়ায়নি কেন? ‘‘এর জবাব আমারও জানা নেই। তবে ১০ জুলাই আইএমএ আমাকে ডেকেছে,’’ বলেন কাফিল। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে সাসপেনশন তোলেনি যোগী সরকার। এ বিষয়ে শীঘ্রই তিনি উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করবেন বলে এ দিন জানান কাফিল।