Kharagpur IIT Student Death

ধন্দ কাটাতে ফয়জ়ানের পরিবারের ডিএনএ পরীক্ষা

অসমের বাসিন্দা ফয়‌জ়ান ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে ফয়‌জ়ানকে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:১৯
Share:

আইআইটি খড়্গপুর। —ফাইল চিত্র।

খড়্গপুর আইআইটি-র হস্টেলে ছাত্র ফয়জ়ান আহমেদের মৃত্যুর সময়ে কি দ্বিতীয় কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন? ক্রমশ ঘনীভূত হতে থাকা সেই সন্দেহ দূর করতে ফয়‌জ়ানের বাবা-মায়ের ডিএনএ পরীক্ষা করছে কলকাতা হাই কোর্ট গঠিত সিআইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ডিএনএ প্রোফাইল ম্যাচিংয়ের জন্য তাঁদের রক্তের নুমনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যা মিলিয়ে দেখা হবে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া রক্তের সঙ্গে।

Advertisement

এ দিকে, ফয়জ়ানের মৃত্যুর পরে বেশ কয়েক দিন তাঁর দেহ ঘরে পড়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। এখন জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি জানতে পেরেছে, ফয়জ়ানের দেহ ঘরে পড়ে থাকার সময়েই এক সহপাঠী, ওই একই ঘরে বসবাসকারী এক ছাত্র ঘরে ঢুকে নিজের ‘ইনডাকশন কুকার’ নিয়ে বেরিয়ে যান। সেই ছাত্রের বয়ান অনুযায়ী, তিনি ফয়জ়ানের দেহ দেখতে পাননি। এই ছাত্র এবং তাঁর আরও এক সহপাঠী সত্য বলছেন কি না, তা জানতে তাঁদের ‘পলিগ্রাফ’ পরীক্ষারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিআইডি।

সিআইডি সূত্রের খবর, গত বছর ১৪ অক্টোবর ফয়‌জ়ানের মৃত্যুর পাঁচ দিনের মাথায় হস্টেলের ওই রুম থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে রাজ্য ফরেন্সিক দল জানায়, যে রক্ত পাওয়া গিয়েছে, তার গ্রুপ ‘এবি’ পজ়িটিভ। দাবি করা হয় সেটা ফয়জ়ানেরই। কিন্তু ছাত্রের পরিবার দাবি করে, ফয়‌জ়ানের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ পজ়িটিভ। তার সপক্ষে নথিও জমা দেয় পরিবার। আর তাতেই ঘটনাস্থলে কত জন ছিল তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়। এর মাঝে কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি জানায়, ঘটনাস্থলে তারা এক জনেরই উপস্থিতি পেয়েছে এবং সেটা ফয়জ়ানই।

Advertisement

এখন সিআইডির দাবি, নতুন করে ফয়জ়ানের রক্তের নমুনা এখন পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে, ধন্দ কাটাতে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া রক্তের ডিএনএ-র সঙ্গে ফয়জ়ানের বাবা-মায়ের ডিএনএ প্রোফাইল মিলিয়ে দেখা হবে। যদি দেখা যায়, সেই ডিএনএ মিলে যাচ্ছে, তা হলে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া রক্ত ফয়জ়ানের বলেই প্রমাণ করা সহজ হবে। কিন্তু, যদি সেই ডিএনএ না-মেলে, তা হলে সে দিন ঘটনাস্থলে দ্বিতীয় ব্যক্তির উপস্থিতির সপক্ষে যুক্তি জোরালো হবে।

উল্লেখ্যে, ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় ময়না তদন্তে খুনের কথা বলা হয়েছিল। সেখানে ওই ছাত্রের মাথার পিছনে আঘাতের কথাও বলা হয়েছে। ওই আঘাত কী ভাবে লেগেছে বা কেউ আঘাত করার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে কী না, তাই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অসমের বাসিন্দা ফয়‌জ়ান ছিলেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, খুন করা হয়েছে ফয়‌জ়ানকে। এ নিয়ে তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টে গেলে আদালতের নির্দেশে বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে ফয়‌জ়ানের দেহ অসমের কবর থেকে তুলে কলকাতায় এনে দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করা হয়। সেই ময়না তদন্তের পরে বিশেষজ্ঞ কমিটি রিপোর্ট দিয়ে জানায় ফয়‌জ়ানকে খুন করা হয়েছে। আদালত আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে সিট গঠন করলেও তার সদস্য নিয়ে বিতর্ক দেখা দেওয়াতে আদালত গত অক্টোবরে নতুন করে দল গঠন করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement