এবার জনতার মত নিতে চায় সিপিএম। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটে বামেদেরভরাডুবি হয়েছে। কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটে গিয়েও একটি আসন জোটেনি। সেই বিপর্যয়ের পর এ বার হাল ফেরানোর চেষ্টায় সিপিএম। দলের কাছে সাধারণ মানুষ কী চান, সেটা জানতেই আম জনতার দরবারে যেতে চাইছে তারা।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির আগের বৈঠকে গত ২৯ মে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সম্প্রতি রাজ্য কমিটির বৈঠকে ৫২ জন নেতা ২ দিনের বৈঠকে বিপর্যয়ের পর হাল ফেরানোর বিষয়ে আলোচনা শেষ করেছেন। তারপরেই দলীয় স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবার সমাজের বিশিষ্টজন-সহ সাধারণ মানুষদের কাছে সরাসরি জানতে চাওয়া হবে। দলের কাছে তাঁদের প্রত্যাশা কী তা-ও জানতে চায় সিপিএম।
ওই বৈঠকে বিপর্যেয়র দায় স্বীকার করে নিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী। প্রকাশ্য বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিপিএম-সহ বামফ্রন্টের ভোটের হার ক্রমান্বয়ে কমেছে। জনগণের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তাদের সমর্থন হ্রাস পেয়েছে। এক্ষেত্রেরাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ থাকলেও বিজেপি-বিরোধী মনোভাবের ফলে ওই দল লাভবান হয়েছে। জনগণ তৃণমূলকেই বিজেপি-বিরোধী প্রধান শক্তি হিসেবে বেছে নিয়েছে।
এক দশক আগে বামেরা রাজ্যে ক্ষমতা থেকে চলে গেলেও বিধানসভায় শূন্য হয়ে যায়নি। ২০২১-এর নির্বাচনে সেটাই হয়েছে। ঠিক হয়েছে, কেন সিপিএম কোনও এলাকায় গ্রহণযোগ্য হতে পারল না, এ প্রশ্ন নিয়ে দলের শাখা সংগঠনগুলো পৌঁছে যাবে ভোটারদের কাছে। এই কাজে দলের নেটমাধ্যমের কর্মীদের সহায়তা নেবে দল। নেটমাধ্যম মারফৎ দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কর্মীদের কাজে লাগানো হবে। এই কাজে নেটমাধ্যমকেই দলের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বানাতে চাইছে সিপিএম। পাশাপাশি, সাধারণ কোনও মানুষ চিঠি লিখে তা যদি সিপিএমের কোনও পার্টি অফিসে জমা দিয়ে নিজের মতামত জানাতে চান, তা-ও গ্রহণ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সিপিএম আসলে জানতে চায়, সিপিএম কেন ক্রমশ মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে?
সিপিএমের এক কেন্দ্রীয় কমিটির কথায়, ‘‘দলের বিপর্যয় প্রসঙ্গে সাধারণ মানুষের কী মত বা ধারণা তা দল জানতে চায়। কেন এমনটা হল? কেন শূন্যে নেমে যেতে হল? আম জনতার ব্যাখ্যা কী? দলের সমস্ত শাখা সংগঠনকে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দল-দরদি বহু বিশিষ্ট মানুষ এই ফল নিয়ে তাঁদের মূল্যায়নের কথা কথা আমাদের জানিয়েছেন। তার বাইরেও বহু মানুষ আছেন যাদের মূল্যায়ন ও মতামত পার্টি জানতে ইচ্ছুক। সেই প্রক্রিয়াই শুরু হতে চলেছে।’’