নরেন্দ্র মোদী-রাহুল গান্ধী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
পাঁচ রাজ্যের ভোট ঘোষণার মধ্যেই দেশ জুড়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার কৌশল সাজাতে শুরু করেছে এআইসিসি। সেই উদ্দেশ্যে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমের উপর, এমনটাই কংগ্রেস সূত্রে খবর। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার, বিজেপি ও আরএসএস-কে জবাব দিতে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গড়েছে কংগ্রেস। এআইসিসির নির্দেশে সেজে উঠছে সব ক’টি প্রদেশ কংগ্রেস সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসও এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে।
গত রবিবার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে সোশ্যাল মিডিয়া সংক্রান্ত একটি কর্মশালা আয়োজিত হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ দিতে দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির ছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া সেলের জাতীয় চেয়ারম্যান সুপ্রিয়া শ্রীনেত। এ ছাড়াও এই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া সেলের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর লাভ দত্ত, কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
এই কর্মশালায় হাজির বক্তারা পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের সামজমাধ্যমকে শক্তিশালী করার পক্ষে জোর দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে মোট ৪২ জনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া সেলের রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। মূল দায়িত্বে রয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর নেতৃত্বেই পরিচালিত হবে কংগ্রেসের সমাজমাধ্যমের যাবতীয় কর্মকাণ্ড। তার নীচে জেলা কমিটি, লোকসভা ও বিধানসভা ভিত্তিক কমিটি গঠন করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। সেখানেও চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক নিয়োগ করে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মধ্যে। সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পাড়ায় পাড়ায় অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে বিজেপি, মোদী সরকার ও আরএসএসের বিরুদ্ধে প্রচার চালাতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপির বিকল্প হিসাবে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস কী কী করবে, এই কর্মসূচিতে তা-ও তুলে ধরা হবে। পাড়ায় পাড়ায় হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরির পাশাপাশি জেলা, লোকসভা ও বিধানসভা ভিত্তিক হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করতে হবে। এই সব হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপকে সাহায্য করার জন্য তৈরি করা হবে একটি ‘কুইক রেসপন্স টিম’। যারা বিজেপির যে কোনও ধরনের প্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার করতে সোশ্যাল মিডিয়া সেলকে তথ্য সরবরাহ করবে।
কংগ্রেসের এই সমাজমাধ্যমের দলটি কেবলমাত্র বিজেপিকেই নিশানা করবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অশোক। তাঁর কথায়, ‘‘যে হেতু লোকসভার লড়াই সরাসরি বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের, তাই এ ক্ষেত্রে আমরা সরাসরি কেন্দ্রের শাসকদলকেই আক্রমণ করব। আমাদের যাবতীয় প্রচার, পাল্টা প্রচার— সবই হবে বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে।’’
এআইসিসির সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছে, রাহুল গান্ধীর ভারত জনযাত্রায় সমাজমাধ্যমে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। সমাজমাধ্যম কতটা শক্তিশালী, ভারত জোড়ো যাত্রার মাধ্যমে সেই প্রমাণ পেয়েছে এআইসিসি। তাই লোকসভা ভোটে বিজেপি ও আরএসএসের প্রচারের জবাব দিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমকে যত বেশি ব্যবহার করা যায়, ততই ভাল।