অনীকের অপরাজিত ছবিতে বিধানচন্দ্র রায়ের চরিত্রায়ন নিয়ে খুশী নয় কংগ্রেস। ফাইল চিত্র
সত্যজিৎ রায়ের শতবর্ষে তাঁর একটি ছবি তৈরির নেপথ্য কাহিনি নিয়েছবি তৈরি করেছেন চিত্র পরিচালক অনীক দত্ত। সেই চলচ্চিত্রে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়কে ‘সিরিও কমেডিয়ান’ হিসেবে দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করল কংগ্রেস। রবিবার পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের অনলাইন পোর্টালে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন এআইসিসি সদস্য তথা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক (রাজা) ভট্টাচার্য। মূলত তিনিই ছবিতে বিধানের চরিত্রের রূপায়ণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
যদিও ছবিটিতে সত্যজিৎ রূপী জিতু কামালের চরিত্রের নাম দেওয়া হয়েছে অপরাজিত। আর মুখ্যমন্ত্রী বিধানের চরিত্রের নাম দেওয়া হয়েছে বিমান রায়। তাতে দর্শকদের বুঝতে এতটুকু অসুবিধা হবে না যে কে কার চরিত্র অভিনয় করছেন। কংগ্রেস নেতা অশোক তাঁর প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘পরিচালকের চিত্রনাট্য অনুযায়ী, বিভূতিভূষণ যে তখন মৃত তা নাকি বিধান রায় জানতেনই না, সাহিত্য সংস্কৃতি বিধান রায় বুঝতেনই না এবং পরান বন্দোপাধ্যায়ের অভিনয়ে বিধান রায় হয়ে উঠলেন একজন সিরিও কমিক চরিত্র! অথচ প্রকৃত ইতিহাস তা নয়। বিধান রায়ের হাস্যরস ছিল অনেক বুদ্ধিদীপ্ত সম্পূর্ণ বা ‘উইট’-এ ভরা।’
বিধান রায়ের সত্যজিৎকে ছবি নির্মাণে সাহায্য করা নিয়েও তথ্য বিভ্রান্তির অভিযোগ এনেছেন এই কংগ্রেস নেতা। নিজের প্রতিবেদনে প্রথম বন্ধনীর ব্যবহার করে তিনি লিখেছেন, ‘(প্রসঙ্গত বিধানবাবুর সময় তথ্য সংস্কৃতি বিভাগ ছিল না, যার জন্য সিনেমা ফান্ডিং এর দফতর সেভাবে ছিল না, উনি বোধহয় তখন কৃষি দফতর বা গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক থেকে কিছু টাকা বরাদ্দ করিয়েছিলেন)।’অনীকের দেখানো ছবিতে তথ্য বিভ্রাটের অভিযোগ এনে অশোক আরও লিখেছেন, ‘সরকারি অর্থ ওভাবে দেওয়া যায় না। তাই ছবির চিত্রনাট্য বদলানোর কথা বলেছিলেন বিধান রায়, তাও সত্যজিত রায়কে বাজিয়ে দেখার জন্য। বিভূতিভূষণকে গল্প বদলাতে বলেননি বিধানবাবু। বিভূতিবাবু তখন ইহলোকে নেই এটা প্রখর স্মৃতিশক্তি ও মেধা সম্পন্ন বিধান রায়ের মনে ছিল না— এটা কি আদৌও বিশ্বাসযোগ্য? আসলে এমন কোনও কথাই বিধান রায় বলেননি। বলেছিলেন সম্পূর্ণ অন্য কথা।’
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর এ ভাবে রুপোলি পর্দায় পেশ করার কারণও নিজের মতো করেই পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের এই অনলাইন পোর্টালে লিখেছেন এই কংগ্রেস নেতা। তিনি লিখেছেন, কোনওটাই অনীক দত্তের অজানা, এমন বলা ও ভাবাটা মুর্খামি হবে। তা হলে? হতেই পারে পরিচালক তাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক ও জীবন দর্শনের অনুগামী হয়ে বিধান রায়-কে দেখাতে চেয়েছেন। সে স্বাধীনতা তাঁর আছে।’ প্রসঙ্গত অনীক যে দর্শনগত ভাবে বামপন্থী, এই লাইনে সেকথাই তুলে ধরতে চেয়েছেন অশোক।
এমন সব অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে পরিচালকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তা বেজে গিয়েছে। তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেলে তা প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে।