Berhampore

তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে বোমাবাজি, ধৃত ৭

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, গোয়ালজানে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিবাদ কয়েক বছরের পুরনো। সম্প্রতি একটি ধর্ষণের ঘটনায় এক যুবকের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তাপ আরও বাড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪ ০৮:৪৭
Share:

সংঘর্ষের পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল। রবিবার, বহরমপুরের গোয়ালজানে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

লোকসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে ৪ জুন। দু’ সপ্তাহও পেরোল না। রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বহরমপুরের গোয়ালজান এলাকা। শনিবার গভীর রাতে বহরমপুর শহরের পশ্চিমে, ভাগীরথী তীরবর্তী ওই এলাকায় বিজেপি এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। ইট, লোহার রড, লাঠি-সোঁটা নিয়ে একে অন্যের উপর হামলা চালানোর পাশাপাশি বোমাবাজির অভিযোগও উঠেছে। কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গোলমালে দু’পক্ষের কয়েক জন আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বহরমপুর থানার এক মহিলা পুলিশকর্মী-সহ মোট ছ’জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
শনিবার রাত থেকে এলাকায় পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এই ঘটনায় তিন মহিলা-সহ সাত জন গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে লাঠি, ছুরি, কেরোসিনের জার বাজেয়াপ্ত হয়েছে। রবিবার ধৃতদের বহরমপুরে জেলা আদালতে তোলা হলে চার জনের আট দিনের পুলিশি হেফাজত হয়। বাকি তিন মহিলাকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, দু’পক্ষের তরফে অভিযোগ পেয়ে দু’টি মামলা শুরু হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, গোয়ালজানে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিবাদ কয়েক বছরের পুরনো। সম্প্রতি একটি ধর্ষণের ঘটনায় এক যুবকের গ্রেফতারি নিয়ে উত্তাপ আরও বাড়ে। ধৃত ব্যক্তি বিজেপি-র সঙ্গে যুক্ত এবং তার কড়া শাস্তির দাবি করে সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট করেছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। পাল্টা পোস্ট করেন বিজেপির কর্মীরাও। তা থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা জয়ন্ত দে-র অভিযোগ, ‘‘সমাজমাধ্যমে তর্ক চলছিল। তার জেরে শনিবার রাতে এলাকার একটি ক্লাব এবং আমাদের কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায় বিজেপির লোকজন। ক্লাবে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারের দাবি, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুরের বিজেপি প্রার্থী ওই এলাকায় বেশি ভোট পেয়েছেন। সেই রাগে তৃণমূলের লোকেরা আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হামলায় আমাদের ৬-৭ জন কর্মী আহত হয়েছেন। দু’জন গুরুতর আহত হয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কর্মীদের ছ’-সাতটি বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। তাঁদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজিও করে ওরা। তৃণমূল ভোটে জিতে আমাদের উপর হামলা চালাচ্ছে।’’

বহরমপুর (পশ্চিম) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি আলাউদ্দিন শেখের পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপির লোকজন গভীর রাতে আচমকা আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালায়। তাতে আমাদের কয়েক জন আহত হন। তিন জন হাসপাতালে ভর্তি। তিনটি বাড়ি, একটি মোটরবাইক ভাঙচুর করে ওরা। বিজেপি নিজেরা গোলমাল বাধিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’

Advertisement

গোয়ালজানের ওই এলাকাটি জঙ্গিপুর লোকসভার অন্তর্ভুক্ত। ওই কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমানের দাবি, ‘‘বিজেপি আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে। ওরাই আমাদের কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশ নিশ্চয় ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’ মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদবকে এ দিন একাধিক বার ফোন করা হলেও সেটি বেজে যায়। উত্তর মেলেনি এসএমএসের-ও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement