কলকাতা হাই কোর্টের অনুষ্ঠানে (বাঁ দিকে) সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
আদালতের ছুটি এবং অন্য নানাবিধ ‘দীর্ঘসূত্রিতার’ কারণে যে মামলাকারীদের সময় নষ্ট হয়, তা মেনে নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি স্বয়ং। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের বার লাইব্রেরির দ্বিশতবর্ষের অনুষ্ঠানে বলেন, ‘‘আমি যখন ইলাহাবাদ হাই কোর্টে ছিলাম, তখনই আমার এটা মনে হয়েছিল।’’
আদালতের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। এক একটি মামলা কখনও সখনও ২০-২৫ বছর ধরেও চলে। যার খেসারত দিতে হয় সাধারণ মানুষকে। বিষয়টি এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে সিনেমার সংলাপেও সেই দেরির উল্লেখ করা হয়েছে বহুবার। নব্বইয়ের দশকের বলিউডের ছবি ‘দামিনী’র মুখ্য অভিনেতা সানি দেওলের অভিনীত আইনজীবী চরিত্রের সংলাপে ছিল, ‘‘তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ মিলতি রহি হ্যায়...! লেকিন ইনসাফ নেহি মিলা মাই লর্ড।’’ সেই ধারণা যে একেবারে ভুল নয়, তা মেনে নিলেন দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি স্বয়ং।
শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টের অনুষ্ঠানে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন আমি দেখেছি, একজন বার সদস্যের মৃত্যু হলে তাঁর জন্য আদালতের সারা দিনের কাজ বন্ধ রেখে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। বারের সদস্যরা এ-ও বলতেন যে, কোনও বিচারবিভাগীয় কাজও সেদিন আর করা যাবে না। আমি বলব, এটা ভেবে দেখা দরকার যে, বারের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে গোটা সমাজকে কি ভুক্তভোগী করা দরকার?’’
শুক্রবারের অনুষ্ঠানে অবশ্য বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বক্তৃতার প্রথমাংশের অনেকটাই বাংলায় বলেছেন। এ-ও বলেছেন যে, কলকাতা তাঁর ‘প্রিয় শহর’ বলে এখানে আসার আমন্ত্রণ পাওয়ামাত্র তিনি রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। বাংলা সিনেমা এবং বাংলা সাহিত্য তিনি দেখেছেন এবং পড়েছেন বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়।