ফাইল চিত্র।
রাজ্যে বকেয়া উপনির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বুধবার বৈঠকে বসছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। বুধবার বিকালে পাঁচ রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে করবেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের সঙ্গে আরও তিন রাজ্যের উপনির্বাচন বকেয়া রয়েছে। কোভিড সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের উপনির্বাচনগুলি আটকে রয়েছে। অগস্টের শুরুতে সব রাজনৈতিক দলকে চিঠি দিয়ে উপনির্বাচন প্রসঙ্গে তাদের মতামত জানাতে বলেছিল কমিশন। ৩০ অগস্টের মধ্যে মতামত জানানোর সময়সীমাও ধার্য করেছিলেন নির্বাচন কমিশনার। তৃণমূল-সহ সমস্ত রাজনৈতিক দল তাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে কমিশনকে। তার পরেই রাজ্যের উপনির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যসচিবদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে যে উপনির্বাচনগুলি বকেয়া রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ এবং কৌতূহল ভবানীপুর কেন্দ্রটি নিয়ে। ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে। উত্তরবঙ্গের দিনহাটা ও শান্তিপুর থেকে বিধায়কপদ ত্যাগ করেছেন যথাক্রমে বিজেপি-র সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক এবং জগন্নাথ সরকার। উপনির্বাচন হবে সেখানেও। ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণে অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হয়েছেন খড়দহের বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিংহ। ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর প্রয়াত হয়েছেন গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্করও। ওই আসনগুলিতেও উপনির্বাচন হবে। পাশাপাশিই, করোনা সংক্রমণে প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে নির্দিষ্ট সময়ে ভোট করা যায়নি মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জে। সবমিলিয়ে সাতটি আসনে একসঙ্গে ভোট হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা অবশ্য সরাসরিই বলেছেন, ভবানীপুর-সহ রাজ্যে অন্য উপনির্বাচন করাতে কোনও সমস্যা নেই। সে কথা কমিশনকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তার পরেও তৃমমূলের একাধিক প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়েছে অবিলম্বে উপনির্বাচন করানোর দাবি নিয়ে। অন্যদিকে, বিরোধী বিজেপি বলছে, রাজ্যে যা কোভিড পরিস্থিতি, তাতে এখনও উপনির্বাচন করানোর মতো অবস্থা নেই।
বে রাজ্য নির্বাচন দফতর উপনির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে বলেই সূত্রের খবর। ইভিএম এবং ভিভিপ্যাডের ফার্স্ট লেভেল চেকিং থেকে শুরু করে ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রগুলি বাদ দেওয়ার কাজ সেরে ফেলা হয়েছে। তবে দিল্লির নির্বাচন কমিশন কোনও সবুজ সঙ্কেত না দেওয়ায় তারা উপনির্বাচন প্রসঙ্গে এখনও কোনও সক্রিয় পদক্ষেপ করেনি। নির্বাচন কমিশনের বুধবারের বৈঠক শেষে এ বিষয়ে পাকাপাকি কোনও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ, আগামী অক্টোবর থেকেই দেশজুড়ে উৎসবের মরসুম। তাই সেপ্টেম্বরের পর উপনির্বাচন করা অসম্ভব না হলেও একটু কষ্টসাধ্য। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের অবস্থান জানতেই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে। প্রশাসনিক মহল সূত্রে খবর, নির্বাচন কমিশন রাজ্যের কোভিড সংক্রমণের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে চাইতে পারে মুখ্যসচিবের কাছে। এ ছাড়া, যে সমস্ত এলাকায় উপনির্বাচন হবে, সেই এলাকাগুলির সংক্রমণের পরিস্থিতি ও টিকাকরণের বিষয়টিও জানতে চাওয়া হতে পারে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব কমিশনকে ইতিমধ্যে এইসব বিষয়গুলি প্রসঙ্গে অবগত করে চিঠি পাঠিয়েছেন।